
এনসিপি
বহুল প্রত্যাশিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক জুলাই সনদ ২০২৫- এর স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত থাকবেন। তবে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) গভীর রাতে দলটির মিডিয়া সেল থেকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
দলটির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন এক বার্তায় লেখেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এনসিপি অংশ নেবে না। তিনি আরও বলেন, অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কোনো কার্যকর আইনি কাঠামো তৈরি হবে না, এটি কেবল আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
এনসিপির মতে, আইনি ভিত্তি ছাড়া এমন কোনো স্বাক্ষর অর্থবহ নয়; বরং তা “জুলাই ঘোষণাপত্র”-এর মতো একপাক্ষিক চুক্তিতে পরিণত হতে পারে।
বার্তায় আরও জানানো হয়, কমিশনের পরবর্তী কার্যক্রমে এনসিপি অংশ নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে। দলটির দাবি পূরণ হলে তারা ভবিষ্যতে স্বাক্ষর প্রক্রিয়ায় যোগ দেবে।
এদিকে, রাষ্ট্রীয় সংস্কারের দলিল ‘জুলাই সনদ’-এর স্বাক্ষর অনুষ্ঠান উপলক্ষে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। এতে অন্তর্ভুক্ত চুরাশি দফা সংস্কার প্রস্তাবে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল সম্মত হয়েছে।
আরও পড়ুন<<>>‘আইনি ভিত্তি ছাড়া জুলাই সনদে সই করবে না এনসিপি’
তবে প্রকাশিত খসড়ায় ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
তাদের দাবি, ’২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে যে আন্দোলন ফ্যাসিস্ট শাসনের পতন ঘটায়, সে ধারাবাহিক সংগ্রামের ইতিহাস দলিলে অনুপস্থিত। এটি শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি অসম্মান ও বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।
সংগঠনের সভাপতি রিফাত রশিদ বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানই দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা করেছিল।
১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষণার মধ্য দিয়েই তার ভিত্তি স্থাপিত হয়, যা নয় দফা থেকে এক দফায় পরিণত হয় — ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার অবসান ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবি’। কিন্তু জুলাই সনদের খসড়ায় সে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে।
রিফাত আরও অভিযোগ করেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত আন্দোলনকারী ও শিক্ষার্থীদের মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়ায় ইতিহাস বিকৃতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তার মতে, রাজনৈতিক দলগুলো বারবার ছাত্র-জনতার প্রত্যাশাকে উপেক্ষা করেছে, এবারও তার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।