ছবি: আপন দেশ
রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির (জাপা) কর্মী সমাবেশ সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় সমাবেশটি পণ্ড হয়ে যায়। দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। দলীয় কোন্দলের জেরেই এমন ঘটনা ঘটে।
দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। তারা একে অপরের দিকে চেয়ার ছুড়ে মারতে থাকে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে জাপার জরুরি কর্মী সমাবেশটি পণ্ড হয়ে যায়।
সংঘর্ষ শুরু হয় বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে। মুহূর্তেই পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করে। তারা উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল (টিয়ার শেল) নিক্ষেপ করে।
কাকরাইল মোড় থেকে শান্তিনগর ও বিজয়নগর পর্যন্ত এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়ার কুণ্ডলী তৈরি হয়। নেতাকর্মীরা দিকবিদিক ছুটতে শুরু করেন। নারী কর্মীরা আতঙ্কে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটেন। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার প্রাথমিক খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন>>>‘উপদেষ্টাদের নয়, বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে জাতির সেফ এক্সিট দরকার’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এ জরুরি সভার ডাক দিয়েছিলেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া নিয়ে দলে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ দ্বন্দ্ব ক্রমশ বাড়ছিল। দলীয় প্রতীক ‘লাঙল’ নিয়েও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। অভিযোগ ওঠে, ক্ষমতাসীন একটি মহল এ প্রতীকের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। এসব বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করতেই জি এম কাদের এ সমাবেশ ডাকেন।
বলা হয়েছিল, এ সমাবেশ থেকে নির্বাচনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। দলের ভেতরের বিভাজন নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।
বিকেল তিনটার পর থেকেই নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আসতে থাকেন। কাকরাইল, শান্তিনগর ও নাইটিঙ্গেল এলাকা মিছিলে মুখর ছিল। একটি ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। মঞ্চে প্রথমে প্রেসিডিয়াম সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বক্তব্য দেন। এরপর চেয়ারম্যান জি এম কাদের মঞ্চে ওঠেন।
জি এম কাদেরের আগমনে স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয় এলাকা। নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন, “লাঙল থাকবে, জাপা বাঁচবে”, “কাদের ভাই এগিয়ে চলো”। কিন্তু বক্তৃতা শুরুর ঠিক আগেই মিছিলের একাংশ পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে। এতে পরিস্থিতি চরম উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে শুরু করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, জাপা নেতারা অনুমতি ছাড়াই জনসমাগম বাড়াচ্ছিলেন। তারা সড়কও অবরোধ করে। এ কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল ব্যবহার করা হয়। কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সেন্টু পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মী সমাবেশ করছিলেন। পুলিশ বিনা উসকানিতে টিয়ার শেল ছোড়ে ও লাঠিচার্জ করে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় কিছু পক্ষ চায় না জাপা স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করুক।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































