সংগৃহীত ছবি
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আয়োজিত ব্যবসায়ীদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কিচেন মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে কিচেন মার্কেটের সামনে জড়ো হন সহস্রাধিক ব্যবসায়ী। তারা কারওয়ান বাজারে চলমান চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন শুরু করেন। কর্মসূচি চলাকালীন হঠাৎ একদল বহিরাগত ব্যক্তি ব্যবসায়ীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এলাকা।
ব্যবসায়ীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে কিচেন মার্কেটের সামনে এলে হামলাকারী ব্যক্তিরা সেখান থেকে পালিয়ে যান। তারপর ব্যবসায়ীরা কিচেন মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান। এ ঘটনার জেরে প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
আরও পড়ুন>>>ফের শাহবাগ অবরোধ, তীব্র যানজট
কারওয়ান বাজারের ইসলামিয়া শান্তি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কারওয়ান বাজার সুপারমার্কেট, কিচেন মার্কেট, ১ ও ২ নম্বর সুপারমার্কেটের ব্যবসায়ীরা আবদুর রহমান ও তার সহযোগীদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন দোকানভিত্তিক মাসিক ও দৈনিক হারে চাঁদা নেয়া হচ্ছে। এমনকি বরফ বিক্রেতাদের কাছ থেকেও অর্থ আদায় করা হচ্ছে। চাঁদাবাজির অভিযোগে আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল তিনটি মামলা করা হয়েছে।
বেলায়েত হোসেন বলেন, চাঁদাবাজির প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করছিলাম। হঠাৎ বহিরাগত কিছু লোক এসে আমাদের ওপর হামলা চালান। এতে অনেক ব্যবসায়ী আহত হন। মানববন্ধনের বিষয়টি আগে থেকেই থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছিল। তারপরও হামলা হলো।
বেলায়েত হোসেন বলেন, আবদুর রহমান তেজগাঁও থানা যুবদলের সদস্যসচিব ছিলেন, তবে চাঁদাবাজির অভিযোগে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে তিনি এখনো চাঁদাবাজি করছেন।
ব্যবসায়ীরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করেন বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, কারওয়ান বাজারকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিমুক্ত করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সদস্যসচিব সাজ্জাদুল মিরাজ বলেন, যারা মানববন্ধন করেছেন, তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ব্যবসায়ীদের কমিটিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করা হয়েছে। সেখানে আরেকটি গ্রুপ হামলা করেছে। আর আবদুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছিল গণমাধ্যমে একটি বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে। এটা তখন ভুল–বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে হয়েছিল।
পুলিশের তেজগাঁও অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ফজলুল করিম বলেন, এখানে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন গ্রুপ রয়েছে। এখানে মানববন্ধনে এক পক্ষের বিরুদ্ধে অন্য পক্ষ দাঁড়িয়েছে। মানববন্ধন চলাকালে একটি পক্ষ এসে তাদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। মানববন্ধন শেষ হয়েছে। যারা আহত হয়েছেন, তাদের থানায় এসে মামলা করতে বলা হয়েছে। এটার সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































