
আটক ছাত্রী ও ইনসেটে নিহত জুবায়েদ হোসেন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তার ছাত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ছাত্রীর নাম বর্ষা। তিনি ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী। উচ্চ মাধ্যমিকের (এইচএসসি) এ শিক্ষার্থীর টিউটর ছিলেন জুবায়েদ। তাকে বাসায় গিয়ে পড়াতেন তিনি।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১১টার পর পুরান ঢাকার আরমানিটোলার নূর বক্স লেন থেকে ওই ছাত্রীকে আটক করে নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।
পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তাকে (ওই ছাত্রীকে) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
এর আগে যে ভবন থেকে জুবায়েদের লাশ উদ্ধার করা হয় সেটির পঞ্চম তলায় বসবাসকারী ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাকেও প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
রোববার সন্ধ্যায় ওই ভবনের তৃতীয় তলার সিঁড়ি থেকে জুবায়েদের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ভবনের পাঁচ তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকা ওই ছাত্রীকে গণিত ও বিজ্ঞান পড়াতেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র জুবায়েদ।
এদিকে রাত ১১টা পর্যন্ত জুবায়েদের লাশ ওই ভবনেই ছিল। পুলিশের বিশেষায়িত তদন্ত ইউনিট পিবিআই’র কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে। পরে রাত ১১টার দিকে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এদিকে হত্যার খবর পেয়ে জুবায়েদের বন্ধু ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস থেকে নূর বক্স লেনে ছুটে যান। তারা বাড়িটির নিচে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে যান।
আরও পড়ুন<<>>জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদকে হত্যা
পরে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতার্কমীরা রাত পৌনে ১১টার দিকে তাঁতীবাজার এলাকায় প্রধান সড়ক অবরোধ করে। প্রায় এক ঘণ্টা রাস্তা আটকে রাখার পর রাত পৌনে ১২টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে বংশাল থানার দিকে রওনা হয়। পরে সেখানে অবস্থান করে স্লোগান দিতে থাকেন।
থানার সামনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ‘আমার ভাই মর্গে, খুনি কেন বাহিরে’ ‘বিচার বিচার বিচার চাই’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত ঝরে, প্রশাসন কি করে’ ‘প্রশাসনের তালবাহানা, চলবে না, চলবে না’ এমন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, রোববার সন্ধ্যার দিকে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার পানির পাম্প গলিতে জুবায়েদের টিউশনির বাসার সিঁড়িতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। জুবায়েদ ওই বাসাটিতে টিউশনি করাতে গিয়েছিলেন। কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তদন্ত করা হচ্ছে।
জুবায়েদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর রেজাউল করিম। রোববার রাতে আরমানিটোলায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান ভিসি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেছেন, যারা পালিয়ে গেছে তারাই হত্যাকারী। জুবায়েদ যেখানে টিউশনি পড়াতে যেত সে পরিবারও জড়িত বলে অভিযোগ করেন তিনি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার করার আলটিমেটাম দেন ছাত্রদল সভাপতি।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।