
ছবি : আপন দেশ
আজ ৩১ মে, শুক্রবার বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। ‘তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে দিবসটি। দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী ও স্বাস্থ্যসেবা সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নিয়েছে।
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাণীতে তিনি বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো তরুণ প্রজন্মকে প্রলুব্ধ করতে নিত্যনতুন তামাকপণ্য আকর্ষণীয় প্যাকেজিং ও ডিজাইনে বাজারজাত করছে। আমাদের যুব সমাজকে তামাকজাত পণ্য থেকে দূরে রাখতে এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে।
তামাক বিপুল মৃত্যু এবং ব্যাধির উৎস হওয়া সত্ত্বেও নানা ধরনের কূটকৌশল অবলম্বন করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কোম্পানিগুলো। প্রতিনিয়ত বাহারি মোড়ক ও নিত্যনতুন স্বাদ-গন্ধ ব্যবহার করে নতুন প্রজন্মের কাছে তামাকপণ্যের জীবনক্ষয়ী চরিত্র আড়াল করা হয়। একইসঙ্গে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নানামুখী হস্তক্ষেপের মাধ্যমে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পথে বাধা সৃষ্টি করছে কোম্পানিগুলো।
তামাক সেবনের কারণে তামাকজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে বছরে মারা যায় ১ লাখ ৬১ হাজার। পঙ্গুত্ব বরণ করে প্রায় চার লাখ মানুষ। প্রজ্ঞা এ তথ্য জানায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী চূড়ান্তকরণের কথা; তা না হলে তামাকের আরও বিস্তার জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকিতে পড়বে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে ১৩-১৫ বছর বয়সী অন্তত ৩ কোটি ৭০ লাখ কিশোর-কিশোরী নিয়মিত তামাক ব্যবহার করে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২১ বছর বয়সের আগেই যারা তামাকে আসক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের মধ্যে নিকোটিন নির্ভরতা এবং আমৃত্যু তামাক ব্যবহারের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ বছরে ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু এবং অসুস্থতা এসডিজির তৃতীয় লক্ষ্যমাত্রা সুস্বাস্থ্য অর্জনের একটি বড় বাধা। কাজেই তামাক ও নিকোটিন পণ্যমুক্ত একটি সুস্থ, সুখী ও উদ্যমী প্রজন্ম গড়ে তুলতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, তামাকপণ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। যিনি ধূমপান করেন তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হন। সে সঙ্গে অন্যকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেন। সেজন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।