ছবি: আপন দেশ
মানবাধিকার রাষ্ট্রীয় স্বৈরাচার থেকে সুরক্ষা দেয়। মানুষের সুস্থ,সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকার অধিকার দেয় মানভাধিকার।মানবাধিকার সমাজের সকল স্তরে সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন করে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী।
বুধবার (০৫ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকার একটি কনভেনশন হলে মানবাধিকার খবর আয়োজিত মানবিক মানুষ সম্মাননা-২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। মানবাধিকার খবর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সাবেক সচিব মার্গুব মোর্শেদ, মানবাধিকার সংগঠক রেজোয়ানা বাশার, নাসরিন হেলালী বক্তব্য রাখেন।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন,বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ১৬ বছর প্রতি পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। সোনার বাংলাকে পরিণত করা হয়েছিল মৃত্যু উপত্যাকায়। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ভয়ঙ্কর সময়ে দেশের মানুষ ছিল অধিকার হারা। দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন,ভোটাধিকার ছিল না।
আরও পড়ুন<<>>গণসংযোগকালে বিএনপির প্রার্থী গুলিবিদ্ধ, নিহত ১
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও ন্যায় বিচারের দেউলিয়া হয়ে পড়েছিলো অভিযোগ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নিষ্ঠুর শাসন থেকে রেহাই পাননি পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীরাও। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক আফতাব আহমদ, সাংবাদিক ফরহাদ খাঁ দম্পতি, এডভোকেট এইউ আহমদ, ব্যাংকার বিএম সাকের হোসাইনসহ অসংখ্য পেশাজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার ১৫ বছরে জীবন দিতে হয়েছিল ৬৮ জন সাংবাদিককে।
তিনি বলেন, পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। শাপলা চত্বরে ব্রাশফায়ারে অনেক আলেমকে হত্যা করা হয়। গুম-খুন ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী,কৃষিবিদ, শিক্ষক, ব্যাংকার থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক কর্মী কেউ রেহাই পায়নি নিষ্ঠুরতা থেকে। চাকরি, পদোন্নতি হতো দলীয় বিবেচনায়। ভিন্নমতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তিমূলক বদলি, পদোন্নতি বঞ্চিত ও চাকরিচ্যূতি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এবং র্যাবের গোপন টর্চার সেল-আয়না ঘর তৈরি করে সেখানে ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর চালানো হতো বর্বর নির্যাতন।
সাংবাদিক এ নেতা বলেন, আমরা চাই এমন একটি দেশ যেখানে দুর্নীতি, হানাহানি, গুম, খুন, রাহাজানি, ক্রসফায়ার, ধর্ষণ, নাগরিক নির্যাতনের জন্য থাকবে না আয়না ঘর। থাকবে না বৈষম্য, দারিদ্র, বেকারত্ব, বাজার সিন্ডিকেট, ক্ষমতার অপব্যবহার। থাকবে না মব জাস্টিস। আমরা একটা কল্যাণমূলক রাষ্ট্র চাই। যে রাষ্ট্র সকল নাগরিকের কল্যাণে কাজ করবে।আমরা সেই রাষ্ট্র চাই যেখানে সকল নাগরিক সমঅধিকার ভোগ করবেন। কোনো বৈষম্য থাকবে না। চাকরির ক্ষেত্রে দলীয় বিবেচনায় নয়, মেধারভিত্তিতে নিয়োগ পদোন্নতি হবে। আমরা এমন একটা রাষ্ট্র চাই- যার মালিক হবেন দেশের জনগণ। যে রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন তাদের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হবে। আমরা চাই জনগণই ভোট দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। দিনের ভোট রাতে হবে না। হবে না ডামি নির্বাচন। প্রহসনের নির্বাচন কিংবা কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে জনরায় কেড়ে নেয়া হবে না।
স্বপ্নের বাংলাদেশ তুলে ধরে তিনি বলেন,নতুন বাংলাদেশকে আমরা স্বাবলম্বী দেখতে চাই। সমাজ ও রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়া দুর্নীতির অবসান চাই। একটা শোষণমুক্ত সমাজ চাই। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত প্রশাসন চাই। আমরা সর্বত্র ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন চাই। আমরা আর কোনো বিচারপতির মুখে শুনতে চাই না ‘টুথ ইজ নো ডিফেন্স’।আমরা এমন এক দেশ চাই, যেখানে নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ, জাতি-ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, মতাদর্শ নির্বিশেষে সবাই নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের কাছে সর্বোচ্চ মর্যাদা পাবে। সাংবিধানিকভাবে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের স্বীকৃতি ও অধিকার সুরক্ষা পাবে।
আপন দেশ/এসআর
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































