
প্রতীকী ছবি
প্রযুক্তির এ যুগে মোবাইল বা ল্যাপটপ ছাড়া ভাবা যায় না। কারণ পড়াশোনা, বিনোদন, কেনাকাটা, অফিসের কাজ, সবই এখন অনলাইনে। ফলে কম্পিউটার বা ফোনের স্ক্রিনের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। এর ফলে বাড়ছে চোখের সমস্যা। একটানা অনেকক্ষণ চোখের পেশির উপর চাপ পড়লে চোখ থেকে পানি পড়া, চোখে ব্যথা হওয়া, ক্লান্তি, মাথা যন্ত্রণার মতো নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও, মানসিক চাপ, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া ও ডিহাইড্রেশনও মাথা ব্যাথার কারণ।
কম্পিউটারে কাজ করার সময় মাথা ব্যাথা হওয়ার কিছু সাধারণ কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
-
চোখের উপর চাপ:
কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকলে চোখের উপর চাপ পড়ে। যা মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে, যদি স্ক্রিনের আলো খুব বেশি বা কম হয়, অথবা চোখের পাওয়ারের সঙ্গে স্ক্রিনের দূরত্ব সঠিক না থাকে, তাহলে এ সমস্যা আরও বাড়ে।
-
ভঙ্গিমা ও বসার আসন:
ভুল আসনে বসা বা কম্পিউটার ব্যবহারের সময় ভুল ভঙ্গিমা অবলম্বন করলে ঘাড় ও কাঁধের পেশীতে ব্যথা হয়। যা পরবর্তীতে মাথাব্যথার দিকে মোড় নেয়।
-
পর্যাপ্ত আলো না থাকা
কম্পিউটার ব্যবহারের সময় পর্যাপ্ত আলো না থাকলে চোখের উপর বেশি চাপ পড়ে।এর ফলে মাথাব্যথা করে।
-
মানসিক চাপ:
কাজের চাপ, সময়মতো কাজ শেষ করার চাপ, বা অন্যান্য মানসিক চাপ মাথাব্যথার কারণ।
-
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া:
ঘুমের অভাব শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মাথাব্যথার সৃষ্টি করে।
-
পর্যাপ্ত জল পান না করা:
শরীরে জলের অভাব হলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। যা মাথাব্যথার একটি সাধারণ কারণ।
-
কম্পিউটার স্ক্রিনের ফ্লিকারিং:
অনেক সময় কম্পিউটার স্ক্রিন অল্প অল্প করে কাঁপতে থাকে। যা অনেকের মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
-
অতিরিক্ত শব্দ:
কর্মক্ষেত্রে বা বাড়ির আশেপাশে অতিরিক্ত শব্দ হলে তা মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। মাথাব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
যে ব্যায়ামে চোখের উপর চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়
ঘন ঘন চোখের পলক ফেলা
চোখের সামনে এমন কোনও জিনিস অতর্কিতে এসে পড়লে আপনা থেকেই চোখের পলক পড়ে যায়। এ পলক ফেলার অভ্যাসও কিন্তু চোখের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কম্পিউটার বা মোবাইল থেকে বিচ্ছুরিত তীব্র আলো এক ভাবে চোখের উপর এসে পড়লে সমস্যা হতেই পারে। এ সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়ার উপায় হল বার বার চোখের পলক ফেলা।
চোখের মণি ঘোরানো
একটানা চোখের কাজ করলে চোখের পেশির উপর চাপ পড়া স্বাভাবিক। তাই কাজের ফাঁকে ফাঁকেই চোখ বন্ধ করে, চোখের মণি গোল করে চোখের চারদিকে ঘোরান। এক বার বাঁ দিক থেকে ডান দিক, আবার ডান দিক থেকে বাঁ দিকে ঘোরানো অভ্যাস করুন।
একটি রেখা বরাবর চোখের মণি উপর-নীচ করা
চোখের মণি গোল গোল করে ঘোরানোর মতোই এ ব্যায়াম করার সময়ে একটি সরলরেখা বরাবর চোখের মণি উপর থেকে নীচে, নীচ থেকে উপরে এবং বাঁ দিক থেকে ডান দিকে আবার ডান দিক থেকে বাঁ দিকে সঞ্চালন করতে হয়। চোখের পাতা বন্ধ করে এ ব্যায়াম অভ্যাস করলেও কিন্তু চোখের কষ্ট অনেকটাই কমে।
গরম সেঁক দেয়া
চোখের উপর গরম সেঁক দিলে অশ্রুগ্রন্থি থেকে পানি বেরিয়ে আসে। চোখের পেশির চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এ পদ্ধতি অনেকটাই সাহায্য করে। চোখে ব্যথা নিয়ে ব্যায়াম করতে না পারলে গরম সেঁক দিয়ে আগে ব্যথা কমিয়ে নিন। তার পর হালকা ব্যায়াম করুন।
হাতের তালু ঘষে চোখের উপর তাপ দেওয়া
ইংরেজিতে যাকে বলে পামিং। শুরুতে দুই হাতের তালু ভাল করে ঘষতে থাকুন যতক্ষণ না গরম হয়ে উঠছে। এর পর আলতো করে দু’চোখের পাতার উপর দুই হাতের তালু রাখুন। আরাম পাবেন। অনেকক্ষণ কম্পিউটার বা ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকলে মাঝেমধ্যেই পামিং করা অভ্যাস করুন।
আপন দেশ/এমবি