
ফাইল ছবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়িয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনটি বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এ আদেশ দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির জানান, হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ চলমান থাকবে। তিনি বলেছেন, বুধবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য এক নম্বর আইটেম হিসেবে থাকবে।
এর আগে এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত সোমবার ডাকসুর নির্বাচন প্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিলেন। এ আদেশের ফলে ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু নির্বাচন আটকে গিয়েছিল। হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে চেম্বার আদালতে আবেদন করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে এক ঘণ্টার মধ্যেই চেম্বার আদালত নিয়মিত সিভিল মিসলেনিয়াস পিটিশন (দেওয়ানি বিবিধ আবেদন) না করা পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। ফলে ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের বাধা কেটে যায়। মঙ্গলবার হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিভিল মিসলেনিয়াস পিটিশনটি দাখিল করেন। এরপর সম্পূরক কার্যতালিকায় আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে এবং শুনানি হয়।
ডাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে ৯ সেপ্টেম্বর। নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ থেকে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন এস এম ফরহাদ। তিনি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ নিয়ে ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা বিষয়ে গত ২৮ আগস্ট রিট করেন ডাকসু নির্বাচনের এক প্রার্থী।
আরও পড়ুন<<>>নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে জবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ
রিটের ওপর গত সোমবার হাইকোর্টে শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া ও প্রকাশিত চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকার কার্যক্রম ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করে আদেশ দেন। রুলে ডাকসুর গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় জিএস পদে এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা দেয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট এস এম ফরহাদের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য তথা সম্পৃক্ততার অভিযোগের বিষয়ে তথ্য-প্রমাণাদিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন করতে রিট আবেদনকারীকে নির্দেশ দেন। আদেশে বলা হয়, ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে অনুসন্ধান করবেন। রিট আবেদনকারী ও ফরহাদসহ অন্য নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের বক্তব্য শুনবেন এবং ২১ অক্টোবর আদালতে প্রতিবেদন দেবেন।
ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে এরই মধ্যে ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ আলাদা প্যানেল দিয়েছে। বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলো দুটি প্যানেল দিয়েছে। পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে মোট প্যানেল ১০টির মতো। এবার ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে মোট ৪৭১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন। সদস্য পদে সবচেয়ে বেশি ২১৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৮টি হলে ১৩টি পদে মোট ১ হাজার ৩৫ প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।