Apan Desh | আপন দেশ

টানা বৃষ্টিতেও দাম বাড়েনি সবজি-মাছ-মুরগির

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:৪৩, ৩০ মে ২০২৫

টানা বৃষ্টিতেও দাম বাড়েনি সবজি-মাছ-মুরগির

ছবি : আপন দেশ

বৃষ্টি হলেই দাম বেড়ে যেত বেশিরভাগ পণ্যের। সরবরাহের ঘাতটির কথা বলে সব ধরণের সবজি, কাঁচা মরিচ, মাছ, মুরগি ও ডিমের অতিরিক্ত দাম রাখতো বিক্রেতারা। কিন্তু এবার তার ব্যাতিক্রম হলো। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিনভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন রাজধানীর পথঘাট। কিছু কিছু এলাকায় বুক বরাবর পানি হয়েছিল। তবুও দাম বাড়েনি কোনো পণ্যের। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে জরুরি কাঁচাপণ্যসহ অন্যান্য পণ্য। এতে ক্রেতাদের স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে দেখা গেছে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (৩০ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। এ দন সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রতিটি বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কিছুটা ছিল কম। আবার বাজারে অনেক দোকান বন্ধ দেখা গেছে। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। তবে টমেটো ও পেঁপের দাম কিছুটা বেড়েছে। 

সবজি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, রাতে বৃষ্টি না থাকায় পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ ছিল। যে কারণে পণ্য আনা নেয়াতে খুব বেশি সমস্যা হয়নি। তবে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সবজি আসছে কম। বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় দামে খুব একটা প্রভাব পড়ছে না।

বাজারগুলোতে বেগুন প্রকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর মুখি ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাজনা ১০০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, কাঁচা আম ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন সবজি ফুলকপি ছোট ৫০ টাকা পিস, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৭০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।  

এসব বাজারে লেবুর হালি ১০ থেকে ১৫ টাকা, ধনেপাতা ২৮০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস, ক্যাপসিকাম ২৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা আঁটি, পালং শাক ১৫ টাকা আঁটি, কলমি শাক ২০ টাকা আঁটি, পুঁই শাক ৩০ টাকা আঁটি ও ডাটা শাক ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

তবে বাজারে আলু ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ ৫৫ টাকা ও ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আদা ১৩০ থেকে ২৮০ টাকা, রসুন দেশি ১৩০ টাকা, ইন্ডিয়ান ২২০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, খেসারির ডাল ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে মুরগির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। এদিন বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কম। সোনালি মুরগির দামও কেজিতে ২০ টাকা কমে এসেছে, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৬০ টাকায়। তবে দেশি মুরগির দাম এখনও রয়েছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে।

মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্রয়লার মুরগির দাম কমে যাওয়ায় বিক্রি বেড়েছে। তবে ঈদুল আজহার আগ মুহূর্তে মুরগির দাম বরাবরই কম থাকে বলে তারা জানান। আমির হোসেন নামে এক মুরগি বিক্রেতা বলেন, আমি কয়েক বছর ধরে ব্যবসা করছি। সবসময় এই সময়টা মুরগির দাম কম থাকে। তবে মাছের চেয়ে মুরগির দাম কম থাকায় আমাদের বিক্রি বেড়েছে।

মুরগি কিনে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন কমলাপুর বাজারে আসা কামাল পাশা। তিনি বলেন, দাম অস্বাভাবিক থাকায় মুরগি কেনা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এখন যে দাম এটা ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে।

মুরগির দাম কম থাকলেও ডিমের দাম মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

মালিবাগ বাজারের পাইকারি ডিম বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, বর্ষার এই সিজনে অন্যান্য বছর ডিমের দাম আরো বেশি থাকে। সে হিসেবে এ বছর দীর্ঘদিন ধরে ডিমের দাম কম।

এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। এসব বাজারে প্রতিকেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুই দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙাস ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকা, পাঁচ মিশালি ২২০ টাকা, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বড় বাইম ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে ৮০০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা ও কাজলি মাছ  ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

জাতীয় মাছ ইলিশের দাম সবসময়ই চড়া থাকে। আজকের বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকায়, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২৫০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কিনতে গুনতে হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।

এসব বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও খাসির মাংস ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

এদিকে বৈরী আবহাওয়াতেও চালের বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে আসায় দাম কিছুটা কমেছে। খুচরা পর্যায়ে মিনিকেট চালের কেজি এখন ৭৫ টাকার কাছাকাছি, যা গত সপ্তাহের মতোই অপরিবর্তিত। বাজারে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর প্রভৃতি ব্র্যান্ডের নতুন মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৭৫ টাকায় এবং রসিদ মিনিকেট চাল ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম ৮২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মাসে পুরানো মিনিকেট চালের কেজি ৮৫ টাকার বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া নাজিরশাইল চাল ৮০ থেকে ৯৫ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৫৮ টাকা এবং স্বর্ণা চাল ৫৫ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।  

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়