Apan Desh | আপন দেশ

মমতাজের অপকর্মের ফিরিস্তি শেষ হবার নয়

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ১৮:৩৮, ১৪ মে ২০২৫

মমতাজের অপকর্মের ফিরিস্তি শেষ হবার নয়

মমতাজ বেগম।

এক সময়ের জনপ্রিয় বাউল শিল্পী ও সাবেক এমপি মমতাজ বেগম। তিনি এখন রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে। সম্প্রতি ঢাকার ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বর্তমানে তিনি রিমান্ডে রয়েছেন। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর ধরা পড়ায়, তার বিরুদ্ধে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করা মমতাজ সঙ্গীত জগতে আসেন বাবার হাত ধরে। তার পিতা মধু বয়াতি ছিলেন একজন বাউলশিল্পী। গ্রামে গ্রামে গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন তারা। সে দরিদ্র পটভূমি থেকে উঠে এসে আজ মমতাজের বিরুদ্ধে রয়েছে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ার অভিযোগ।

সাবেক এ সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে—তিনি নিজের এলাকায় গড়ে তুলেছিলেন এক ধরনের একচ্ছত্র আধিপত্য। সিঙ্গাইর ও হরিরমপুর উপজেলার বালুমহলগুলো দীর্ঘদিন ছিল তার নিয়ন্ত্রণে। তার কথার বিরোধিতা করলেই, তিনি নিজের ক্যাডার বাহিনী দিয়ে দমন-পীড়নে নামতেন। স্থানীয়দের কাছে তিনি ছিলেন এক ভয়াবহ নাম।

মমতাজের নামে-বেনামে রয়েছে ঢাকাসহ মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক বাড়ি, হাসপাতাল, রেস্টুরেন্ট, কোল্ড স্টোরেজ ও স্থায়ী মেলার মঞ্চ। মানিকগঞ্জে তার ৫০০ শতাংশ জমির ওপর রয়েছে একটি বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও তার সম্পদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে।

ব্যক্তিগত জীবনেও বিতর্ক তার পিছু ছাড়েনি। মমতাজের প্রথম বিয়ে হয় বাউল সম্রাট রশিদ সরকারের সঙ্গে, যা টেকেনি। পরে মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র রমজান আলীকে বিয়ে করেন। সে সংসারেও টানাপোড়েন চলে দীর্ঘদিন। এরপর নিজের হাসপাতালের এক চিকিৎসক ডা. মঈন হাসান চঞ্চলকে বিয়ে করলেও শেষ পর্যন্ত সে সম্পর্কও ভেঙে যায়।

রাজনীতিতে তার পদার্পণ শুরুতে ছিল বিএনপিতে যাওয়ার আগ্রহের মধ্য দিয়ে। কিন্তু সেখানে সুযোগ না পেয়ে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। সেখান থেকেই তার রাজনৈতিক উত্থান। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হন তিনি। সংসদে গান গেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করাসহ বিভিন্ন সময় বিরোধী দলের নেতাদের নিয়ে কটাক্ষ করে আলোচনায় আসেন।

২০০৮ সালে সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য হন। এরপর টানা দুইবার নির্বাচিত হন নৌকার প্রার্থী হিসেবে। তবে ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ দলের এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি।

নানা সমালোচনার পরেও সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন মমতাজ। তবে সর্বশেষ তিনি রিমান্ডে রয়েছেন একটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়