ফাইল ছবি
ইসির লিখিতি আমন্ত্রণের পাল্টা চিঠি দিতেও রাজি নয় বিএনপি। দলটির নীতি নির্ধারনী ফোরামের একাধিক সদস্যের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নতুন করে পুরনো প্রস্তাব আসছে তাদের কাছে। কোনটি দেশের বাইরের আবার কোনোটি আভ্যন্তরীণ। নির্বাচন কমিশনের চিঠি তারই অংশ। এই চিঠিতে ‘কৌশল’ দেখছে নেতারা।
তিনকাল বিবেচনায় নিয়ে দলের সর্বোচ্চ ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি এবার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিএনপি আর কোনো ফাঁদে পা দেবে না, প্রস্তাবেও সাড়া দেবে না। এতে করে আখেরে যা হবার তা-ই হবে। এখন পর্যন্ত ‘না’-তে আছে বিএনপি।
আলাপকালে তারা বলেছেন, ক্ষমতার বাইরে, আন্দোলনে থাকা বিএনপির কাছে বহুমাত্রিক প্রস্তাব এসেছে। কোনটি লোভনীয় আবার কোনোটি হুমকি-ধমকিমুলক। অতীতে প্রস্তাবগুলো আমলে নিয়ে সাড়া দিয়েছিল। অংশ নিয়েছিল জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনেও। সংসদে কিংবা স্থানীয় নির্বাচনের জয়েচিত্র তাদের হতাশ করেছে। শেষ হিসাব কষে লোকসান বই লাভের ছিঁটেফোটাও দেখেনি। উল্টো দলীয় প্রধানের গায়ে দণ্ডের কালিমা, রাজধানীতে অন্য কোটি মানুষের মতো তিনিওি ভাড়াটিয়া। বিদেশে চিকিৎসার সুযোগও মিলছে না। যিনি ঘরছাড়া করেছেন তার কাছেই নিবেদনপত্র দিতে হচ্ছে ভাড়া বাড়ীতে থাকতেও। দ্বিতীয় প্রধান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও দণ্ড নিয়ে পরবাসে। বসবাস করছেন পাসপোর্টবিহীন।
স্বস্তিতেনেই শেষ সারির নেতারাও। তাদের নামে মামলার পাহাড়। যথাযথ সময়ে ছোঁ মেরে ধরা আর জেলখানায় ভরা হয়, সাজা আর হুলিয়া ছাড়া কিছুই মিলেনি। কমবেশি দেড় লাখ মামলায় আসামী ৪০ লাখ। ১০ দফা দাবি আর ২৭দফা প্রস্তাবনা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। ইতোমধ্যে নয়টি কর্মসূচি পালন করেছে। প্রস্তুত হচ্ছে একদফা আন্দোলনের।
এদিকে বিএনপিকে হঠাৎ করেই সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এ আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তবে চিঠিতে ইসির পক্ষ থেকে বৈঠকের কোনো সময় ও এজেন্ডা নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। বিএনপি সংলাপে বসতে সম্মত হলেই সময় নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলেও চিঠিতে বলা হয়েছে।
ইসির চিঠিকে কৌশলী বলছেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি আপন দেশকে বলেন, যে নির্বাচন কমিশনকে আমরা বৈধতাই দিচ্ছি না, তাদের ডাকে সাড়া দেবার প্রশ্নই আসে না।
তিনি বলেন, যেহেতু দেশবাসীর কাছে এই কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা নেই তাই তারা একটা চিঠি দিয়ে ফেরত চিঠিতে বিএনপির সম্পৃক্ততা দেখাতে চায়। সরকার শত কূটকৌশলের এটি নয়া কৌশল- বলে সাবেক মন্ত্রী।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদধারী একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইসি চিঠি দিয়েছে বিএনপিকে ডাকার জন্য নয়। এদেশে বিনিয়োগকারীদের আস্থা সঙ্কট কাটানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে। যে কারণে ডিও চিঠি। তবে বিএনপি পাল্টা চিঠি তেবে না।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণপত্র হাতে পেয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংলাপে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তার দল এ সংলাপে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না। কারণ বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে। এ বিষয়ে ইসির কিছু করার নেই। এটি সরকারের বিষয়। বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করার সংলাপ ছাড়া অন্য কোনো আলোচনায় অংশ নেবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ। তাদেরও সত্যিকার অর্থে কিছু করার মানসিকতা নেই। লোক দেখানোর জন্য সংলাপের চিঠি দিয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে বিএনপি মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তার দলের অন্য নেতারা ও প্রয়োজনে সমমনা দলগুলোর নেতাসহ বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ডিও পত্রের মাধ্যমে আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































