
ছবি : আপন দেশ
সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভের ১০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দাবিতে অনড় বিক্ষোভকারীরা। রাত পেরিয়ে দিনের আলো ফুটলেও অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার সাড়া পাননি তারা।
শুক্রবার (০৯ মে) সকাল ৮টা পর্যন্ত যমুনার সামনে দেখা যায় আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে মুহুমুহু স্লোগান দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। ফাঁকে ফাঁকে গান, হামদ ও কবিতা আবৃত্তিও চলছে। এসময়, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’, খুনি লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে, ‘ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’, ‘ব্যান করো, ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘দিল্লি না, ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘গোলামি না আজাদী, আজাদী আজাদী’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও, ঘুরিয়ে দাও’, ‘২৪ বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
কর্মসূচির কারণে যমুনার সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিত রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১০টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এতে জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, জুলাই ঐক্য, ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। রাত ১টার দিকে মিছিল নিয়ে যমুনার সামনে যান এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তাদের সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও ছিলেন।
এনসিপির পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। রাত একটার পর হেফাজতে ইসলামের বেশ কিছু নেতা-কর্মী যমুনার সামনে যান। রাত দেড়টার দিকে এবি পার্টির কিছু নেতা-কর্মী যমুনার সামনে উপস্থিত হন। রাত দুইটার দিকে সেখানে যান ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা।
পরে রাত ২টার দিকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দায়িত্ব ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। আমরা সরকারের বাইরে এবং ভেতরে সে দাবি বলেছি। কিন্তু আজকে নয় মাস পরেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের জন্য আমাদের আবার রাজপথে নামতে হয়েছে।
এ কর্মসূচিতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে ইন্টেরিমকে আর সময় দিতে রাজি নই, লাশ হয়ে ফিরব না হয় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
ফজরের আজানের পর সারে ৪টা নাগাদ উপস্থিতি কমতে থাকে। এসময় এনসিপিসহ অন্যান্য সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের চলে যেতে দেখা যায়। বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ যমুনার সামনেই জামায়াত করে ফজরের নামাজ আদায় করেন। পরে আবার বিক্ষোভ শুরু করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১০টা থেকে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এতে জাতীয় নাগরিক পার্টি, জুলাই ঐক্য, শিবির, আপ বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী, ইনকিলাব মঞ্চ, খেলাফত ছাত্র মজলিস, ছাত্র পক্ষের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। প্রতিবেদন লেখা (সাড়ে ৭টা) পর্যন্ত ধীরে ধীরে উপস্থিতি বাড়তে দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীদের অবস্থানকে কেন্দ্র করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনের সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ। সেখান দিয়ে কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। এ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।