Apan Desh | আপন দেশ

গ্রামীণফোনে অবৈধভাবে সাড়ে ৩ হাজার ছাঁটাই, শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:০৪, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১৫:২২, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

গ্রামীণফোনে অবৈধভাবে সাড়ে ৩ হাজার ছাঁটাই, শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গ্রামীণ ফোনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি । ছবি-আপন দেশ

লাভজনক ও সম্মানজনক কোম্পানি হয়েও শ্রমিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত করার অভিযোগ উঠেছে দেশের বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি কথায় কথায় অবৈধভাবে শ্রমিক ছাঁটাই করছে।

দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীদের প্রভাব খাটিয়ে, আদালতের আইন প্রক্রিয়াকে অসৎ উদ্দেশ্যে দীর্ঘায়িত করে এবং শ্রম আইন, মানবাধিকার ইত্যাদি অমান্য করে এ যাবৎ প্রায় ৩ হাজার ৪৬০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

এ নিয়ে সোমবার (০২ ডিসেম্বর) সকাল থেকে রাস্তায় নেমেছে ভুক্তভোগীরা। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গ্রামীণ ফোনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে তারা।

চাকরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বঞ্চিতরা এ কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীরা তিন দফা দাবি জানাচ্ছে। 

দাবির মধ্যে রয়েছে, অবৈধভাবে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহাল ও তাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা, শ্রমিকদের সকল বকেয়া অর্থ দ্রুত পরিশোধ করা ও শ্রমিকদের উপর নিপীডনের সঙ্গে জড়িত গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ ও স্বৈরাচারের দোসরদের শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

চাকরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত প্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক আবু সাদাত মো. শোয়েবের নেতৃত্বে পালিত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখছেন বঞ্চিতরা।

চাকরিচ্যুত করা মানে ‘গণহত্যা’ দাবি করে বক্তরা বলছেন, ২০১০ সাল থেকে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে কথায় কথায় চাকরিচ্যুত করছে। এ প্রক্রিয়াতেই গ্রামীণফোন পতিত স্বৈরাচারের দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীদের প্রভাব খাটিয়ে, আদালতের আইন প্রক্রিয়াকে অসৎ উদ্দেশ্যে দীর্ঘায়িত করে এবং শ্রম আইন, মানবাধিকার ইত্যাদি অমান্য করে প্রায় ৩,৪৬০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করেছে। এ ঘৃণ্য কাজে স্বৈরাচারী পতিত চক্রের ঘনিষ্ঠ। চিহ্নিত কর্মকর্তা জড়িত। ২০২২-২৩ সালেই মেধাবী বেশিরভাগ কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করা হয়েছে।

তারা বলেন, দেশে যখন বিদেশি বড় বিনিয়োগ বা কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে তখন প্রথম শর্ত থাকে দেশের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। কিন্তু বিনাদোষে ছাঁটাই হচ্ছে শ্রমিকদের। ছাটাইয়ের পরও বকেয়া বা পাওনা দেয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে আর্থিক ও সামাজিক ক্ষতিপূরণসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। ২০০৯-২০১২ সালের ৫% লভ্যাংশের বিলম্ব বিতরণের প্যানাল্টিসহ সকল বকেয়া অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।

জিপিতে স্বৈরাচারের দোসদের প্রভাব রয়েছে অভিযোগ করে তারা বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের উপর অত্যাচার-নিপীড়ন চালানো হয়েছে, এখনো হচ্ছে। অত্যাচারী টেলিনর ম্যানেজমেণ্ট, গ্রমীণফোনের সিইও, সিএমওসহ তাদের সকল অনুসারী অত্যাচারী ম্যানেজার এবং চাটুকার ইউনিয়ন কর্মীদের চাকরিচ্যুত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয় কর্মসূচি থেকে।
 
আবেগাপ্লুত এক কর্মকর্তা তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া বিভীষিকামর অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অনুধাবন করছি যে, অমানবিক ও বেআইনীভাবে আমাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন থেকে বলপূর্বক আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ২০১২ সাল থেকে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম গাড় উঠেছে। তার মধ্যে কিছু সামান্য সফলতা অর্জিত হলেও বেশিরভাগ দাবী এখনও বিভিন্ন মাত্রায় চলমান, কোন কোনটা আবার বার্থ হয়ে নিঃশেষ। 

হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পরিবর্তিত সময় ও কঠিন বাস্তবতায় এ বিরাট শ্রমশক্তির অধিকার আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে তীব্র আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলা হবে। 

কর্মসূচি থেকে জানানো হয়, জিপি এখনো সরকারের পাওনা ১২ হাজার কোটি টাকা প্রদান করেনি।

আপন  দেশ/এবি/এসএমএস

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়