
ফাইল ছবি
আজ ২৩ আগস্ট দেশের প্রখ্যাত দুই সঙ্গীত তারকার জন্মদিন। একজন আবিদা সুলতানা অন্যজন বেবি নাজনীন। দুজনের জন্মই উত্তরবঙ্গে। দুজনই প্লেব্যাকে সমান সফলতা পেয়েছেন। আধুনিক বাংলা গানের সম্মানীত শিল্পীদের তালিকায় তারা।
আবিদা সুলতানা
বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার একটি সংস্কৃতিমনা পরিবারে আবিদার জন্ম। তাই শৈশব থেকেই আবিদা গান, নাটক, নাচসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ছোটবেলায় গানের চেয়েও নাচের প্রতি বেশি ঝোঁক ছিল তার। পরবর্তীতে তিনি মন দিয়ে গানটাই শেখেন বাবু রাম গোপাল মহন্ত, ওস্তাদ ফুল মোহাম্মদ, আক্তার সাদমানি, বারীন মজুমদার, ওস্তাদ নারু এবং ওস্তাদ সগীরউদ্দীন খানের কাছে।
রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং নজরুলসঙ্গীত এ দুই বিষয়ে আবিদা তালিম নিলেও আধুনিক গানেই তিনি ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন। পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গীত প্রতিযোগিতা ‘ফুলকড়িঁ’তে বিজয়ী হয়ে ১৯৬৮ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারের সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৭৪ সালে তিনি চলচ্চিত্রে সর্বপ্রথম প্লেব্যাক করেন। এ পর্যন্ত আবিদা ৪৫০ টির বেশি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।
১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের আরেক সঙ্গীত কিংবদন্তি শিল্পী রফিকুল আলমকে ভালোবেসে বিয়ে করেন আবিদা । ফারশিদ আলম নামে তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে, যিনিও গানের সঙ্গে জড়িত। তার বোন সালমা সুলতানা ও রেবেকা সুলতানা- দুজনই দেশের গুণী শিল্পী। তাদের ছোট ভাই জনপ্রিয় সঙ্গীতপরিচালক শওকত আলী ইমন। সালমা সুলতানা বিয়ে করেছিলেন কিংবদন্তি সঙ্গীতকার আলাউদ্দিন আলীকে। তাদের মেয়ে আলিফ আলাউদ্দিনও গানের জগতে সুপরিচিত।
আরও পড়ুন<<<>> মৌয়ের সঙ্গে কলহের গুঞ্জন, মুখ খুললেন জাহিদ হাসান
আবিদা সুলতানার বিখ্যাত গানের মধ্যে রয়েছে- বিমূর্ত এ রাত্রি আমার, আমাদের দেশটা স্বপ্ন পুরী, একটা দোলনা যদি, আমি সাত সাগর পাড়ি দিয়ে, এ ভালোবাসা বেঁচে থাকবে, আমরা যে ব্যঞ্জারান, হারজিৎ চিরদিন থাকবেই, মধু চন্দ্রীমার এ রাত, একি বাঁধনে বল, রঙীলা পাখিরে, আমি জ্যোতিষীর কাছে যাব, রোজিনা অভিনীত ‘রূপবান’ ছবির সব গানগুলো।
‘ব্লাক ডায়মন্ড’ খ্যাত বেবি নাজনীন
১৯৬৫ সালের ২৩ আগস্ট নীলফামারীর সৈয়দপুরে বেবি নাজনীনের জন্ম। গানের জগতে পা রাখেন ১৯৭৬ সালে। সারাদেশ জুড়ে ‘ব্লাক ডায়মন্ড’ নামে যার সুখ্যাতি বেবি নাজনীনের। বাংলা গানের ইতিহাসে এমন ‘উপাধী’ পাওয়া সংগীত তারকাও একজনই। প্রায় সাড়ে চার দশকের ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন বেবি। আধুনিক সংগীতের অর্ধশতাধিক একক অডিও অ্যালবামসহ অসংখ্য দ্বৈত অডিও অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে তার। স্টেজ পারফরমেন্সে তিনি অদ্বিতীয়। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের বিশেষ শ্রেণির তালিকাভূক্ত সঙ্গীতশিল্পী বেবি নাজনীন। ২০০৩ সালে ‘সাহসী মানুষ চাই’ সিনেমায় ‘এলোমেলো বাতাসে’ গানটির জন্য শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
আরও পড়ুন<<>> ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমাকে কী অফার করা হয়েছিল
বেবি নাজনীনের বিখ্যাত গানের তালিকায় রয়েছে- ‘এলোমেলো বাতাসে উড়িয়েছি শাড়ির আঁচল’, ‘কাল সারা রাত ছিল স্বপনেরও রাত’, ‘দু চোখে ঘুম আসে না তোমাকে দেখার পরে’, ‘লোকে বলে আমার ঘরে নাকি চাঁদ উঠেছে’, ‘আজ পাশা খেলবো রে শাম’, ‘সারা বাংলায় খুঁজি তোমারে’, ‘ও বন্ধু তুমি কই কই রে.. এ প্রাণো বুঝি যায় রে...’, ‘মানুষ নিষ্পাপ পৃথিবীতে আসে প্রভৃতি। চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়াও সিজেএফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার, বিনোদন বিচিত্রা পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার লাভ করেন।
গানের বাইরে রয়েছে তার রাজনৈতিক পরিচয়। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যও বেবী নাজনীন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে তিনি ডাকেন ‘মা’ সম্ভোধন করে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।