Apan Desh | আপন দেশ

মসজিদে ড্রোন হামলায় ৭৮ জনের প্রাণহানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    

প্রকাশিত: ২১:১২, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মসজিদে ড্রোন হামলায় ৭৮ জনের প্রাণহানি

ছবি: সংগৃহীত

সুদানের দারফুর অঞ্চলে একটি মসজিদে ভয়াবহ ড্রোন হামলায় অন্তত ৭৮ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে দারফুরের এল-ফাশের শহরে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

এ হামলার জন্য আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করা হয়েছে। তবে তারা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ওই হামলার দায় স্বীকার করেনি।

স্থানীয় একটি মেডিক্যাল সূত্র বিবিসিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিবিসি ভেরিফাই ফুটেজ নিশ্চিত করেছে যে, সেখানে প্রায় ৩০টি মরদেহ সাদা কাফনের কাপড় ও চাদরে মোড়ানো অবস্থায় মসজিদের পাশে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, শুক্রবার ভোরে ফজরের নামাজের সময় ড্রোন হামলা চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে বহু মানুষ প্রাণ হারায়। চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৭৮ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে লোকজনকে উদ্ধারে কাজ চলছে।

চলতি সপ্তাহে আরএসএফ নতুন করে এল-ফাশেরে আক্রমণ চালিয়েছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরের কাছেই অবস্থিত বাস্তুচ্যুত লোকজনের আশ্রয় নেয়া আবু শৌক নামের একটি শিবিরেও ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে।

আরওপড়ুন<<>>সাইবার হামলায় ইউরোপজুড়ে শতশত ফ্লাইট বাতিল

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাবের (এইচআরএল) স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা গেছে, ওই আশ্রয়কেন্দ্রের একটি বড় অংশ এখন আরএসএফ-এর নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া ছবিতে দেখা গেছে, আরএসএফ সেনারা জয়েন্ট ফোর্সের সদর দফতরে প্রবেশ করেছে। এই সদর দফতরটি একসময় জাতিসংঘ কম্পাউন্ড ছিল এবং এটি সেনাবাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষাকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়।

বিবিসি যাচাই করা ফুটেজে দেখা গেছে, আরএসএফ যোদ্ধারা এখন ওই কম্পাউন্ডের ভেতরে অবস্থান করছে, তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। এ অগ্রগতি হলে এল-ফাশেরের বিমানবন্দর এবং সেনাবাহিনীর ডিভিশন সদর সরাসরি আরএসএফ-এর হামলার আওতায় চলে আসবে।

সুদানের বিশ্লেষক ও কর্মীরা আশঙ্কা করছেন, আরএসএফ শহরে থাকা বেসামরিকদের টার্গেট করতে পারে। শহরের অধিকাংশ বাসিন্দাই এমন জাতিগত গোষ্ঠীর সদস্য, যাদের আরএসএফ শত্রু হিসেবে দেখে।

শুক্রবার জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলেছে, সংঘাত ক্রমশ জাতিগত রূপ নিচ্ছে। দুই পক্ষই পরস্পরের সমর্থক হিসেবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ওপর প্রতিশোধমূলক হামলা চালাচ্ছে। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা নথিভুক্ত করেছে যে, আরএসএফ দখলকৃত এলাকায় অ-আরব সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে। তবে আরএসএফ এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা কোনো ‌‘গোত্রীয় সংঘাতের’ সঙ্গে জড়িত নয়।

উল্লেখ্য, গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সুদানে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ-এর মধ্যে ভয়াবহ সংঘাত চলছে। গত কয়েক সপ্তাহে আরএসএফ বড় ধরনের অগ্রগতি দেখিয়েছে এবং তারা এল-ফাশের পুরোপুরি দখলে নেয়ার জন্য লড়াই করছে। এ শহরটি দারফুরে সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি এবং এখানে এখনো তিন লাখের বেশি বেসামরিক মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।

আপন দেশ/এমএইচ
 

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়