Apan Desh | আপন দেশ

ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় ২৭০০ পরিবার নিশ্চিহ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    

প্রকাশিত: ০৮:৩৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১১:১৪, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় ২৭০০ পরিবার নিশ্চিহ্ন

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে গাজা। দখলদার বাহিনীর বোমায় অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটির ২ হাজার ৭০০-এর বেশি  পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অঞ্চলটির প্রায় ৯০ শতাংশ অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ ধ্বংসযজ্ঞে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এ তথ্য জানিয়েছে।

উপত্যকাটির সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সামরিক দমননীতি আর জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির মাধ্যমে দখলদার বাহিনী ইতোমধ্যেই গাজার ৮০ শতাংশেরও বেশি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ২০২৩ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৭৩ হাজার ৭৩১ জন ফিলিস্তিনি নিহত বা নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২০ হাজারের বেশি শিশু এবং ১২ হাজার ৫০০ নারী। নিহতদের মধ্যে আরও রয়েছেন ১ হাজার ৬৭০ জন চিকিৎসাকর্মী, ২৪৮ জন সাংবাদিক, ১৩৯ জন বেসামরিক উদ্ধারকর্মী এবং ১৭৩ জন পৌর কর্মচারী। আহত হয়েছেন এক লাখ ৬২ হাজারেরও বেশি মানুষ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতাকে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়ে গাজার মিডিয়া অফিস আবারও গণহত্যা বন্ধে বিশ্বকে পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়েছে।

গাজায় এ ভয়াবহ পরিস্থিতির প্রতিবাদে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চলছে একের পর এক বিক্ষোভ। শনিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে শত শত মানুষ ওডেনপ্ল্যান স্কোয়ারে সমবেত হয়ে ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ বন্ধে সুইডিশ সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। একই দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসেও হাজারো বিক্ষোভকারী প্লেস দ্য লা রিপাবলিক এলাকায় ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে গাজার হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।

এদিকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি ওঠে। ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস নামের একটি সংগঠনের আয়োজিত এ বিক্ষোভে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ অংশ নেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। লন্ডন পুলিশ অন্তত ৪২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে।

গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বাহিনী ধ্বংস করে দিয়েছে শহরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বহুতল ভবনটি। চলমান যুদ্ধে দীর্ঘ বিরতির পর এ ধরনের বড় টাওয়ারকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করল আইডিএফ।

আরওপড়ুন<<>>গাজা দখলে বেপরোয়া ইসরায়েল, আরও ৬৭ ফিলিস্তিনি নিহত

এদিকে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের সবচেয়ে বড় নগরী গাজা সিটির আরেকটি বহুতল ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। এছাড়া ভূখণ্ডটিতে হামলায় একদিনে নিহত হয়েছেন আরও অন্তত ৬৫ জন। 

ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০টি ভবন ধ্বংস করা হয়েছে। এর ফলে আশ্রয় হারাচ্ছে হাজারো পরিবার। সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজা সিটির ধ্বংসযজ্ঞ আরও তীব্র করেছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, শহরের আরেকটি বহুতল ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে দখলদার বাহিনী। এতে গাজার সবচেয়ে বড় নগরকেন্দ্র দখলের অভিযানে ইসরায়েল এ পর্যন্ত অন্তত ৫০টি ভবন ধ্বংস করেছে।

এছাড়া আল-রুয়া টাওয়ারে হামলার পাশাপাশি রোববার (০৭ সেপ্টেম্বর) গাজায় আরও অন্তত ৬৫ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ৪৯ জনই ছিলেন গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা। ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, তারা বাসিন্দাদের সরতে বলার পর ওই ভবনটিতে হামলা চালায়। এতে চারপাশে অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোও পালিয়ে যায়।

ফিলিস্তিনি এনজিও নেটওয়ার্কের প্রধান আমজাদ শাওয়া হামলার সময় ঘটনাস্থলের কাছে ছিলেন। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, অবস্থা ভয়ঙ্কর, চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শত শত পরিবার আশ্রয় হারিয়েছে। ইসরায়েল এভাবে মানুষকে দক্ষিণে সরাতে চাইছে। অথচ সবাই জানে, দক্ষিণেও কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়