
ছবি: সংগৃহীত
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় পাঁচ বছর পর আবারও পাকিস্তানি এয়ারলাইন্সগুলো যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে এবং সেখান থেকে ফ্লাইট চালুর আবেদন করতে পারবে। এ সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এলো যখন পাকিস্তান সরকার তার দীর্ঘদিন ধরে সংকটে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ)-কে বেসরকারিকরণের প্রক্রিয়া জোরদার করছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) ইসলামাবাদে অবস্থিত ব্রিটিশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানে বিমান নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের এয়ার সেফটি কমিটি এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
হাইকমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজ্য বা বিমান সংস্থাকে তালিকা থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত একটি স্বাধীন ও কারিগরি নির্ভর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নেয়া হয়। এতে আরও বলা হয়, এ স্বাধীন ও কারিগরি প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে পাকিস্তান এবং এর বিমান সংস্থাগুলোকে যুক্তরাজ্যের এয়ার সেফটি তালিকা থেকে সরিয়ে ফেলার।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি কর্তৃক পিআইএর ওপর চার বছরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরপরই যুক্তরাজ্যের এ সিদ্ধান্ত এসেছে। ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মাধ্যমে এ বছর জানুয়ারিতে পিআইএ ইউরোপের উদ্দেশ্যে আবার ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে।
আরওপড়ুন<<>>ইরাকে শপিং মলে ভয়াবহ আগুন, নিহত ৫০
এদিকে, যুক্তরাজ্যের এ সিদ্ধান্তকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের এ সিদ্ধান্ত সেখানে বসবাসকারী পাকিস্তানিদের জন্য স্বস্তির বার্তা।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জুন মাসে করাচিতে পিআইএ’র একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে ৯৭ জন যাত্রী নিহত হয়। ওই দুর্ঘটনার এক মাস পরই যুক্তরাজ্য পিআইএর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তদন্তে জানা যায়, দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিল পাইলট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের মানবিক ভুল। এর পরই পিআইএর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠে যে, সংস্থাটির এক-তৃতীয়াংশ পাইলটের লাইসেন্স ভুয়া বা সন্দেহজনক। পাকিস্তান সরকার এ অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তদন্ত শুরু করে।
এ নিষেধাজ্ঞার ফলে পিআইএ প্রতিবছর প্রায় ৪০ বিলিয়ন রুপি (১৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) আয় হারিয়েছে বলে জানিয়েছিল সংস্থাটি। যুক্তরাজ্যের লন্ডন, ম্যানচেস্টার ও বার্মিংহাম রুটগুলো পিআইএর সবচেয়ে লাভজনক বলে বিবেচিত। লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে সংস্থাটির বহু কাঙ্ক্ষিত ল্যান্ডিং স্লট এখনও সংরক্ষিত রয়েছে।
বর্তমানে পিআইএ-তে প্রায় সাত হাজার কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। তবে সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরেই অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, ঋণের বোঝা ও দুর্বল নিরাপত্তা রেকর্ডের কারণে সমালোচিত। সরকার বলেছে, তারা পিআইএকে বেসরকারিকরণের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সম্ভাব্য ক্রেতা খুঁজে বের করতে হিমশিম খাচ্ছে। তবে সম্প্রতি গৃহীত পুনর্গঠনমূলক সংস্কার কর্মসূচির ফলে সংস্থাটি ২১ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো কার্যকরী মুনাফা অর্জন করেছে। যা সম্ভবত নতুন বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট করতে সহায়ক হবে।
আপন দেশ/এমএইচ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।