
ছবি: সংগৃহীত
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সামরিক সংঘাত ক্রমেই ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে। প্রাণঘাতি হামলার পাশাপাশি বাক যুদ্ধেও জড়িয়েছে তারা। হামলার শুরুটা করেছে ইয়াহুদিবাদি দখলদাররা। পাল্টা সামরিক অভিযানে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইরান। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১ হাজার ড্রোন ইসরায়েলের দিকে ছুড়েছে তেহরান। এতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৪ জন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, ইরান থেকে ছোড়া এ আক্রমণাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনগুলোর অধিকাংশই ছিল ‘অত্যাধুনিক ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন’। এসবের মধ্যে রয়েছে ‘সেজিল-২’ নামের দীর্ঘপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং হাইপারসনিক ‘ফাত্তাহ’ ক্ষেপণাস্ত্র, যা সরাসরি ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ট্রু প্রমিজ-৩’ নামে অভিযানের অংশ হিসেবে তারা ‘সেজিল-২’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, যার পাল্লা প্রায় ২,৫০০ কিলোমিটার এবং যা ইসরায়েলের গভীর ভেতরে আঘাত হানতে সক্ষম। এ ক্ষেপণাস্ত্র কঠিন জ্বালানির এবং দ্বৈত-পর্যায়ের প্রযুক্তিতে তৈরি, যা ইরান নিজেরাই উদ্ভাবন করেছে।
এর পাশাপাশি মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাতে তেহরান থেকে ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবের দিকে হাইপারসনিক ‘ফাত্তাহ-১’ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাতে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হেনেছে। এর আগে, ২০২৪ সালের ১ অক্টোবরেও ইরান একযোগে একাধিক ‘ফাত্তাহ-১’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল।
প্রসঙ্গত, ‘ফাত্তাহ’ ক্ষেপণাস্ত্র ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো উন্মোচন করে ইরান। নামকরণ করেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। আইআরজিসি একে ‘ইসরাইল-স্ট্রাইকার’ হিসেবে উল্লেখ করে। ওই সময় তেহরানে হিব্রু ভাষায় লেখা একটি বিশাল ব্যানারে দেখা গিয়েছিল—‘তেলআবিবে ৪০০ সেকেন্ড’—যা প্রতীকী হুমকি হিসেবে আলোচিত হয়েছিল।
তবে ইরান তাদের ক্ষেপণাস্ত্রকে ‘হাইপারসনিক’ দাবি করলেও আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা এর প্রকৃত সক্ষমতা নিয়ে সন্দিহান। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, তারা সেজিল বা ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে ইরানের দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
এদিকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। দুপক্ষই ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান হামলার মাধ্যমে একে অপরকে নিশানা করছে। সংঘাতে প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। পরিস্থিতি আরও ঘণীভূত হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।