Apan Desh | আপন দেশ

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ ধ্বংস ডেকে আনবে—খামেনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    

প্রকাশিত: ১৮:৪৪, ১৮ জুন ২০২৫

আপডেট: ১৮:৪৬, ১৮ জুন ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ ধ্বংস ডেকে আনবে—খামেনি

আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।

তেহরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক পথ বেছে নিলে তার পরিণতি হবে ‘অপ্রতিরোধ্য ও ভয়াবহ’। ইরান জোর করে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ বা শান্তি—কোনোটিই মেনে নেবে না। দেশের সম্মান রক্ষায় শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকবে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সতর্ক করে এসব কথা বলেন।

বুধবার (১৮ জুন) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের কথাও উল্লেখ করে বলেন, যারা ইরান ও এর ইতিহাস জানে তারা জানে, ইরানিরা হুমকির ভাষার প্রতি ভালো সাড়া দেয় না।

আর আমেরিকানদের জানা উচিত যে, যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ নিঃসন্দেহে অপ্রতিরোধ্য পরিণতি বয়ে আনবে, বলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।

  • ইরানে মার্কিন হামলা হবে ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে দেয়া: বিশ্লেষকের সতর্কবার্তা

ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছেন। তিনি কি ‘কূটনৈতিকভাবে পিছু হটবেন’ না কি ইরানের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ শুরু করবেন’?

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস-এর জ্যেষ্ঠ ফেলো এলি জেরানমায়েহ।

আরও পড়ুন>>>মধ্যপ্রাচ্যে কি ২০০৩-এর পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে

জেরানমায়েহ বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে নেতাদের সবসময়ই একটি বিকল্প থাকে। অতীতেও ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্ত থেকে সরে এসেছেন, এবারও তা তার পক্ষে সম্ভব। তিনি আরও বলেন, যদি ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার সিদ্ধান্ত নেন, ইরান তা তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য বলে বিবেচনা করবে।

জেরানমায়েহ বলেন, যদি এ প্যান্ডোরার বাক্স একবার খুলে যায়, আমরা জানি না পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। তিনি যোগ করেন, এ ধরনের সংঘাত সম্ভবত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাকি মেয়াদকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে ফেলবে।

ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস-এর এ জ্যেষ্ঠ ফেলোর মতে, ইরানের জন্য আত্মসমর্পণ কোনো বিকল্প নয়। তারা জানে, সামরিকভাবে তারা জয়ী হবে না, তবে তারা এটাও নিশ্চিত করতে চাইছে যেন সবাই এ সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

• ইসরায়েলের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ইরানের আত্মরক্ষার অধিকার আছে

দখলদার ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ এবং গুণ্ডামির বিরুদ্ধে ইরানের আত্মরক্ষার অধিকার আছে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তিনি বুধবার (১৮ জুন) ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে বলেন, নিজেদের আত্মরক্ষায় ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ ও গুণ্ডামির বিরুদ্ধে এটি ইরানের খুবই স্বাভাবিক, বৈধ ও আইনি অধিকার। এর আগে গতকাল দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে নিয়ে এরদোয়ান বলেন, নেতানিয়াহু এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।

  • তৃতীয়পক্ষ হামলায় অংশ নিলে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু হবে: ইরান

ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাত ও যুক্তরাষ্ট্রের এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়া নিয়ে কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সঙ্গে কথা বলেছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাঈ। বুধবার আল জাজিরাকে দেয়া এ সাক্ষাৎকারের মূল কিছু বক্তব্য নিচে তুলে ধরা হলো।

• কোনও তৃতীয় পক্ষ ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়লে, সেটি পূর্ণমাত্রার এক সংঘাতের দিকেই যাবে। আর সেটি কেবল এই অঞ্চল নয়; বরং এর বাইরেও ছড়িয়ে পড়বে।

• ইরান আপাতত কেবল ইসরায়েলের ভূখণ্ডকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর ওপর মনোযোগ দিচ্ছে এবং তারা বিশ্বাস করে, প্রতিবেশী দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ইরানের ওপর হামলা চালাতে দেবে না।

  • মাটির ২৬২ ফুট নিচে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, ধ্বংস করা বেশ কঠিন

জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক সাবেক পরিদর্শক ডেভিড অলব্রাইট বলেছেন, ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনা ফর্দো মাটির অন্তত ৮০ মিটার বা ২৬২ ফুট গভীরে, যা ‘ধ্বংস করা কঠিন’। সংবাদমাধ্যম বিবিসি রেডিও ফাইভের সাথে এক সাক্ষাৎকারে এ পরমাণু বিজ্ঞানী জানান, ইসরায়েল হয়ত হামলা চালিয়ে ফর্দো পরমাণু কেন্দ্রটি দীর্ঘ সময়ের জন্য অকেজো করে রাখতে পারে। তবে তারা এটি পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারবে না। তাদের সেই সক্ষমতা নেই। এই কেন্দ্রটি ধ্বংস করতে লাগবে শক্তিশালী বাঙ্কার বাস্টার বোমা। যেটি শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আছে। তিনি বলেন, এখন যেখানে ইসরায়েল হামলা করছে, আমি বিশ্বাস করি ইসরায়েল ওই স্থাপনা দীর্ঘসময়ের জন্য বন্ধ করাতে পারে। আর যুক্তরাষ্ট্র এটি পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারে।

  • মার্কিন ঘাঁটি থেকে ইউরোপের দিকে উড়ে গেছে ৩০টি যুদ্ধবিমান

গত তিন দিনে যুক্তরাষ্ট্রের থেকে ইউরোপের কয়েকটি মার্কিন ঘাঁটির উদ্দেশে উড়ে গেছে অন্তত ৩০টি যুদ্ধবিমান। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ট্র্যাকিং সংস্থা ফ্লাইটরাডার ২৪ এর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

বিবিসির নিজস্ব অনুসন্ধানে জানা গেছে, কেসি-১৩৫ নামের এই বিমানগুলো নামে যুদ্ধবিমান হলেও সাধাররণত এগুলোকে যুদ্ধে ব্যবহার করা হয় না। এগুলো মূলত ট্যাংকার বিমান; অর্থাৎ অপারেশনে ব্যবহৃত যুদ্ধ ও বোমাবাহী বিমানগুলোতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা কেসি-১৩৫ বিমানগুলোর কাজ।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়