
জনপ্রিয় খল অভিনেত্রী রিনা খান
দেশীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় খলনায়িকা রিনা খান। জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও বিগত কয়েক বছর ধরে রুপালি পর্দায় দেখা মেলে না এ অভিনেত্রীর। তার একটাই কারণ, তিনি বিএনপি করেন। গত বছরের জুলাই আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্বস্তিতে থাকলেও মামলা নিয়ে অস্বস্তিতে আছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক জুলুম, অত্যাচারের শিকার এ অভিনয় শিল্পী।
রিনা খানের বড় ছেলে জার্মানিতে থাকার পরও তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। গ্রেফতারের জন্য ওয়ারেন্টও বের হয়েছে বলে জানালেন এ অভিনেত্রী। ছেলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সে ‘মিথ্যা’ মামলা তুলে নেয়ার ব্যাপারে যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পর্কে পদক্ষেপ নিতে মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিএনপি অফিসে এসেছিলেন অভিনেত্রী তিনি।
এদিন রিনা খান জানালেন, এখন কয়েকটি কাগজ হস্তান্তর করতে হবে। তারপর ছেলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় থাকবে। যা অল্পদিনেই শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
ঢালিউডের প্রখ্যাত এ অভিনেত্রী জানান―শুধু বড় ছেলেকে নিয়েই নয়, ছোট ছেলেকে নিয়েও অনেক ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার লোকজন এসে ছোট ছেলেকে বড় ছেলে দাবি করে নিয়ে যেতে চেয়েছে। নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে তাকে।
রিনা খান বলেন, বিগত সরকারের শাসনামলে আপনারা আমাকে সেভাবে কাজে দেখেননি। বিটিভিতেও ডাকা হতো না। কারণ হিসেবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা জানান জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জিসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির এ সহ-সভানেত্রী।
এ অভিনেত্রী বলেন, আমি জিসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভানেত্রী। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলেই আমার আজ এ অবস্থা। আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের উৎখাত চেয়েছি, পেয়েছি। ভবিষ্যতে আমরা আর কোনোদিন আমাদের ওপর, কারও ওপর জুলুম করতে না পারে, সেটাই চাই।
‘বউ শাশুড়ির যুদ্ধ’ খ্যাত এ তারকা নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমি একজন নির্যাতিত সন্তানের মা, আমি অভিনেত্রী সেলিনা সুলতানা রিনা খান। আমার ছেলে ২০০৯ সালে জার্মান গেছে, আমি বিএনপি করি বলে সে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। আবার তার নামে ওয়ারেন্ট বের হয়েছে। আমার ছোট ছেলের পেছনেও পুলিশ লেগেছিল। আমি তো ঘরেই থাকতে পারতাম না। কোনো অনুষ্ঠানে যেতে পারতাম না। বিটিভির কোনো অনুষ্ঠানে ডাকা হতো না আমাকে। ফ্যাসিস্ট সরকার যাওয়ার পর নতুন করে জীবন পেলাম আমরা।
ঢালিউডের অন্যতম এ খলঅভিনেত্রী মামলা থেকে মুক্তির আবেদন জানানোর কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি মামলা নিয়ে বিএনপির পার্টি অফিসে এসেছিলাম। আমাদের সালাহউদ্দিন সাহেব আছেন, তিনি আমাদের মুরব্বি, আমাকে অনেক সহায়তা করেছেন। বিএনপির সবাই অনেক সহায়তা করেছেন। মঙ্গলবার আবেদন করলাম ছেলের নামে মামলা প্রত্যাহারের জন্য। অনেক কাজ রেখে সকাল থেকে এসে এসব শুরু করেছি।
প্রসঙ্গত, ১৯৮২ সালে চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক সুভাস দত্তের ‘সোহাগ মিলন’ সিনেমার মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিষেক করেন রিনা খান। মূলত খলচরিত্রে অভিনয় করে দর্শকহৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। তবে বিভিন্ন সিনেমায় ইতিবাচক চরিত্রেও দুর্দান্তভাবে নিজেকে মেলে ধরেছেন এ গুণী অভিনেত্রী।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।