Apan Desh | আপন দেশ

প্রেসক্লাবের সামনে এনটিআরসিএ বঞ্চিতের অবস্থান কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:০০, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রেসক্লাবের সামনে এনটিআরসিএ বঞ্চিতের অবস্থান কর্মসূচি

ছবি: আপন দেশ

নিয়োগের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে সম্মিলিত এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফেডারেশন। ১-১২ তম নিবন্ধিত সনদধারী প্রার্থীরা এতে অংশ নেন।

প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশ চেয়ে তারা প্রজ্ঞাপন দাবি করেন। প্রজ্ঞাপন জারি হলে তাদের নিয়োগের পথ খুলবে।

গত ২৭ নভেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এনটিআরসিএ এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আজকের সংবাদ সম্মেলন ওই বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে করা হয়। বক্তারা এ বিজ্ঞপ্তিটি ‘অত্যন্ত নিন্দনীয় ও মিথ্যা’ বলে দাবি করেন।

উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, সম্মিলিত জোটের নির্বাহী গণ -আমির হোসেন, নীলিমা চক্রবর্তী, জিএম ইয়াসিন, রুহুল আমিন পাখি, শাহ আলম, রুহুল আমিন হাতেমী। এছাড়াও পরিচালক, বাস্তবায়ন কমিটি ও সাধারন ১-১২ তম নিবন্ধন সনদ দারীগণ।

কর্মসূচিতে বক্তারা দাবি করেন, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ। (এনটিআরসিএ) যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও মিথ্যা। এ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে চাই আপনাদের মাধ্যমে। এনটিআরসি ১-১২ তমদের যে সনদ প্রদান  করেছে, সে সনদের মেয়াদ চাকুরী প্রার্থীদের বয়স শিথিল যোগ্য।  সে সময় নিয়োগের দায়িত্ব ছিল গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির কর্তৃপক্ষের হাতে। কিন্তু আপনাদেরকে আমরা জানাতে চাই আমরা যেমন এনটিআরসিএ কর্তৃক নিবন্ধিত হয়ে চূড়ান্তভাবে সনদ অর্জন করেছি, প্রক্ষান্তরে  কিছু ব্যক্তি পরীক্ষা না দিয়েও অবৈধ ভাবে সনদ প্রাপ্ত হয়েছে, যেটাকে আমরা জাল সনদ বলে থাকি। এ প্রার্থীরা তাদের এ জাল সনদ ব্যবহার করে গভর্নিং বডি ও বং ম্যানেজিং কমিটির আওতায় দ্রুত নিয়োগ নিয়ে নেয়। যার কারণে আমরা স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শাখায় নিয়োগ পেতে ব্যর্থ হই।  

আরও পড়ুন>>>দুই বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার পর পদ্মায় ফেললো বিএসএফ

এ জাল সনদ ধারী সদস্য সংখ্যা প্রায় ষাট হাজার। যা ১ অক্টোবর ২০১৫ সালে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। 

বক্তারা এনটিআরসিএ-এর কাজের সমালোচনা করেন। এনটিআরসিএ যখন নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা গ্রহণ করে। তখন তাদের উচিত ছিল একটি কাজ করা। প্রথমে সনদপ্রাপ্তদের তালিকা যাচাই করা দরকার ছিল। কতজন নিয়োগ পেয়েছেন ও কতজন বাকি আছেন, তা দেখা দরকার ছিল। বাকিদের নিয়োগের ব্যবস্থা আগে নেয়া উচিত ছিল। এরপর নতুন পরীক্ষা গ্রহণ করা ঠিক ছিল। কিন্তু এনটিআরসিএ সে কাজ করেনি।

তারা আইনি বিষয়েও আলোকপাত করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপন ছিল। তারিখ ছিল ২০ মে ২০১৩। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশে একটি নির্দেশনা ছিল। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এনটিআরসিএ সনদের পাঁচ বছরের মেয়াদ বিলুপ্ত করা হয়। এটি পূর্বের সকল নিবন্ধন পরীক্ষার জন্যও প্রযোজ্য ছিল। কিন্তু এনটিআরসিএ সে আদেশ ও সুপ্রিম কোর্টের রায় মানেনি। তারা তাদের স্বার্থে রায় পরিবর্তন করে। এতে ১-১২তম নিবন্ধনধারীরা নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হন।

তারা আরও জানান, ৩য় গণ-বিজ্ঞপ্তিতে অল্প সংখ্যক প্রবীণ প্রার্থীর নিয়োগ হয়। কিন্তু ২২ হাজার চাকরিরত প্রার্থীর নিয়োগ সুপারিশ করা হয়। এটি এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। এতে ১-১২তম নিবন্ধনধারীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন।

বক্তারা নিয়োগ প্রক্রিয়ার ত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারা বলেন, একই ব্যক্তিকে বারবার নিয়োগ সুপারিশ করা হয়েছে। একজন প্রার্থী তিন বা তার বেশি প্রতিষ্ঠানে সুপারিশ পেয়েছেন। অথচ যারা একবারও নির্বাচিত হননি, তাদের জন্য কোনো ব্যবস্থা হয়নি।

একটি সনদ নিয়ে একাধিক সুপারিশ কেন দেয়া হবে? এ ধরনের ভুল আইন ও পদ্ধতির কারণে প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন। এ বঞ্চনার দায় এনটিআরসিএ-কেই নিতে হবে।

বক্তারা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগও তোলেন। তৃতীয় গণ বিজ্ঞপ্তিতে একাধিক প্রতিষ্ঠানে আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়। এ সুযোগে নিয়োগ বঞ্চিতদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। ওই সময় প্রায় ২০৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে তারা দাবি করেন। এর ফলে নিঃস্ব হয়ে তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।

বক্তারা বলেন, বিগত সরকারের তৈরি বৈষম্য দূর করতে হবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও জটিলতা নিরসন করতে হবে। অনৈতিক অর্থ আত্মসাৎকারীদের সনাক্ত করার দাবি জানান।

তাদের প্রধান দাবি হলো ১-১২তম নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিতদের নিয়োগ দেয়া। তারা প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ বৈষম্য দূর করে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োগই তাদের বাঁচার একমাত্র উপায়।

বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাজপথে যেহেতু নেমেছি, নিয়োগ নিয়েই এ রাজপথ ছাড়বো। দীর্ঘদিনের মামলা সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন হবে শুধু নিয়োগ সুপারিশ করলেই। আমরা প্রধান উপদেষ্টার আদেশের অপেক্ষায় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করবো।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়