
ছবি: আপন দেশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্যের হত্যাকাণ্ডের পর ক্যাম্পাসে বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রদলের একাংশ বহিরাগতদের এনে বিক্ষোভ করেছে। এরপর সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ক্ষোভ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
যেখানে ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্যাম্পাসে যখন বহিরাগত নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি পদক্ষেপ নেয়ার কথা উঠছে, তখনই বহিরাগত এনে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রদল। তবে ছাত্রদলের প্রশ্ন, সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য দলীয় প্রোগ্রামে যদি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে এসে অংশগ্রহণ করে, সেটা কী অপরাধ?
বুধবার (১৫ মে) দুপুরে ভিসি চত্বরে কালো ব্যাজ ধারণ করে অবস্থান কর্মসূচি হয়। সেখানে কেন্দ্রীয় ও ঢাবি শাখার নেতাকর্মীদের পাশাপাশি মহানগরের বিভিন্ন কলেজের ছাত্ররাও অংশ নেন। অবস্থান কর্মসূচির পর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলও বের করা হয়। কর্মসূচিতে অনেক বহিরাগত উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা একটা বড় সংখ্যক অংশগ্রহণকারী বহিরাগত। তাদের একজনের নাম সোহান। যিনি শাহবাগ থানা ছাত্রদলের একজন কর্মী। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ছাত্রদলের একজন ভাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। এজন্য আমরা ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আসছি।
গুলিস্তান থেকে আসা জিহাদ নামের আরেকন বলেন, আমি জানি না কি কারণে আনা হয়েছে। কার নেতৃত্বে এসেছে জানতে চাওয়া হলে উনি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এদিকে বহিরাগত নিয়ে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে আন্দোলন করার অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাহদি বলেন, যে বহিরাগতরা সাম্য ভাইকে নৃশংসভাবে খুন করলো, আমার বোনদের উপর ১৫ জুলাই বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছিল, সে বহিরাগতদের সাথে নিয়ে ভিসি-প্রক্টরের পদত্যাগের আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার শঙ্কা তৈরি করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ শিক্ষার্থী আবিদ হোসেন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাম্য ভাই খুন হয়েছেন বহিরাগতদের হাতে। সে কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে স্বাভাবিকভাবে দাবি উঠেছিল বহিরাগত মুক্ত নিরাপদ একটি ক্যাম্পাস। কিন্তু আমরা দেখেছি নিজেদের দলীয় প্রোগ্রামের জন্য ক্যাম্পাসে বহিরাগত আনা হয়েছে। এমন দাবি করা হচ্ছে যার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী একমত না। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হতাশ করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিম তামি বলেন, ছাত্রদলের প্রোগ্রামে বহিরাগত ইস্যু নিয়ে নোংরামি হচ্ছে। ছাত্রলীগের আমলেও আমাদের নেতাকর্মীরা এভাবে মারা যায়নি। মার খেয়েছে কিন্তু মারা যায়নি। ছাত্রলীগের আমলে এই বহিরাগতরাই আমাদের নিরাপত্তা দিয়েছে। তাদের একজন সহযোদ্ধা মারা গেছে তারা বিচার চাইতে আসবে না?
শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, যে সাম্যের ডাকে জুলাই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমে এসেছিল। তার হত্যার বিচারের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের প্রোগ্রামে যদি কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অংশগ্রহণ করে সেটা অপরাধ? মানবিকভাবে বিবেচনা করে আমি এ প্রশ্ন রাখতে চাই।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।