
ছবি: আপন দেশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ (নিটার)-এর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৩তম ব্যাচের লেভেল-১, টার্ম-২ সেমিস্টারের ফলাফল ঘিরে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের অ্যাকাডেমিক সংকট।
প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা গেছে, প্রায় ২২০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৭ জনই পুনঃভর্তির (re-admission) ঝুঁকিতে পড়েছেন। সংখ্যাটি ব্যাচের প্রায় ২৬ শতাংশ। যা থেকে স্পষ্ট, একটি বড় অংশই সেমিস্টার উত্তীর্ণের যোগ্যতা হারিয়েছে।
ফলাফল প্রকাশের পরপরই শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দেয় তীব্র অসন্তোষ। অনেকে ক্যাম্পাসে এসে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হন। তারা দাবি করেন, ফলাফলে অনেক গড়মিল রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুরুতে একটি ফলাফল প্রকাশ করা হলেও তাতে ভুল ধরা পড়ায় তা ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। পরে সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ইনকোর্স নম্বর যথাসময়ে প্রকাশ করা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, সেমিস্টার ফাইনালের অন্তত দশ দিন আগে ইনকোর্স নম্বর দেয়ার কথা। কিন্তু তা হয়নি। এমনকি চূড়ান্ত ফলাফলেও ইনকোর্স নম্বর সংক্রান্ত কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। এতে তারা বিভ্রান্ত ও হতাশ হয়ে পড়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে নিটার প্রশাসন জরুরি সভা ডাকে। বিভাগীয় প্রধান ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট করে বলেন, তারা বারবার অ্যাকাডেমিক ব্যবস্থাপনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সময়মতো কার্যক্রম না হওয়া ও তথ্য গোপন করাই পুনঃভর্তির পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
শিক্ষকরা জানান, তারা সমস্যার সমাধানে আন্তরিক। তবে অনেক সিদ্ধান্তই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার অধীনে হওয়ায় তাদের পক্ষে সরাসরি ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়।
শিক্ষার্থীরা শঙ্কা প্রকাশ করেন, এসব কাঠামোগত জটিলতা না কাটলে ভবিষ্যতেও একই সংকট তৈরি হবে। এতে তাদের শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পুনঃভর্তির ঝুঁকিতে থাকা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবর্ষ যেন নষ্ট না হয়, সে বিষয়ে সম্ভাব্য করণীয় নিয়ে আলোচনা হবে। বিভাগীয় প্রধান আশ্বাস দেন, আগামীকাল ইনকোর্স নম্বর প্রকাশ করা হবে।
এখন প্রশ্ন হলো, এত শিক্ষার্থী যদি একইসঙ্গে ব্যর্থ হয়, তবে দায় কাদের? শিক্ষা কার্যক্রমের ত্রুটি, সময় ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা, নাকি প্রশাসনিক গাফিলতি—এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে শিক্ষার্থীরা।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।