Apan Desh | আপন দেশ

বেগুনে আগুন, সবজি কিনতেই পকেট ফাঁকা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:২৮, ১০ অক্টোবর ২০২৫

বেগুনে আগুন, সবজি কিনতেই পকেট ফাঁকা হচ্ছে

ছবি : আপন দেশ

এক কেজি বেগুন কিনতে লাগে ১৬০ টাকা। পেঁপে ছাড়া ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যায় না। ফলে সবজি কিনতেই পকেট ফাঁকা হয়ে যায়, ডিম, মাছ-মাংস কিনব কি দিয়ে? এমন প্রশ্ন ক্রেতা শরীফুল ইসলামের। ভারী বৃষ্টির কারণে সরবরাহে ঘাটতির অজুহাতে প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রতিদিনই বাজারে গিয়ে নতুন দামের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এদিন কমলাপুর কাঁচাবাজারে দেখা হয় শরীফুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারে সব জিনিসের দামই বেশি। সবচেয়ে বেশি সবজির দাম। একমাত্র পেঁপে ছাড়া ৮০-১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যায় না। বেগুনের দামে তো আগুন লেগেছে। আমাদের মত স্বল্প আয়ের মানুষদের কথা কেউ ভাবে না। সরকারের বাজার পরিস্থিতি দেখার কোনো লোক আছে বলে মনে হয়না।

এদিকে বৃষ্টি ও সরবরাহ কম থাকায় গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচের দাম হঠাৎ বেড়ে যায়। যদিও সপ্তাহ শেষে সেই দাম কিছুটা কমেছে। তবে সার্বিকভাবে সবজির বাজার চড়া। বেশি দামে সবজি কিনতে গিয়ে অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

দুই সপ্তাহ আগে কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। গত সপ্তাহে তা এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ৪০০ টাকায়। এখন কিছুটা কমে খুচরা বাজারে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, আর পাড়া-মহল্লায় ২৫০ টাকা দরে।

এদিন রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারে গিয়ে দেখা যায় প্রতিকেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, বেগুন (গোল) প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, বেগুন (লম্বা) প্রতি কেজি ১০০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ধন্দুল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি (ছোট) প্রতি পিস ৬০ টাকা, গাজর প্রতি পিস ১৩০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ৪০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন<<>>বৃষ্টির অজুহাতে কাঁচা মরিচ-সবজি-মাছের বাজার ঊর্ধ্বমুখী 

বাজার করতে আসা রফিকুল বলেন, প্রতিদিন বাজারে এসে নতুন দাম শুনতে হয়। গত সপ্তাহে যে বেগুন ৮০ টাকায় কিনেছি, আজ তা ১৬০ টাকা! এক কেজি সবজি কিনলেই ১০০ টাকা চলে যায়। বাচ্চাদের জন্য ফলমূল বা মাছ কিনে খাওয়ানো এখন বিলাসিতা হয়ে গেছে।

সবজি বিক্রেতা উমর ফারুক বলেন, আমরাও চাই দাম কম থাকুক, তাহলে বিক্রিও ভালো হয়। কিন্তু পাইকারি বাজার থেকেই সব কিছুর দাম বেড়ে আসছে। পাইকারি দামের ওঠানামার কারণে আমাদেরও বাধ্য হয়ে একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

একই সময় মাছ ও মুরগির বাজারেও বেড়েছে উত্তাপ। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা, সোনালি ৩০০-৩২০ টাকা, কক মুরগি ২৬০ থেকে ২৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫৩০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক ডজন ডিমের দাম ১৪০ টাকা। মাছের বাজারেও বড় পরিবর্তন—তেলাপিয়া কেজিপ্রতি ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৫০, কই ২৪০ থেকে ২৮০ এবং রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজারেও স্বস্তি নেই। মিনিকেট চালের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দাম এখন ৭২ থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে। ডায়মন্ড, মঞ্জুর ও সাগর ব্র্যান্ডের মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, রশিদ ৭২ টাকায় আর মোজাম্মেল মিনিকেট ৮৫ টাকায়।

সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাব অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ২ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭২ থেকে ১৮০ টাকায়। 

মসলার বাজারে মিশ্র চিত্র দেখা গেছে। কিসমিস কেজিপ্রতি ৮০০ টাকা, আলুবোখারা ৭০০ টাকা, এলাচ ৪৮০০–৫২০০ টাকা, লবঙ্গ ১৭০০–১৮০০ টাকা, জিরা ৭০০ টাকা এবং গোলমরিচ ১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা ১৩০ টাকা ও চায়না আদা ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৭০ টাকা। দেশি রসুনের দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকায় অপরিবর্তিত থাকলেও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, আর হাইব্রিড পেঁয়াজ ৭৫ টাকায়।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়