Apan Desh | আপন দেশ

সবজির দাম কম, মাছ-মাংসে স্থিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:০২, ২৩ মে ২০২৫

আপডেট: ১৬:২৪, ২৩ মে ২০২৫

সবজির দাম কম, মাছ-মাংসে স্থিতি

ছবি : আপন দেশ

শীতকালীন সবজি শেষ হওয়ার পর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল সবজির বাজার। অবশেষে টানা দুই মাস চড়া থাকার পর কমতে শুরু করেছে সব ধরনের সবজির দাম। ভোক্তাদের মধ্যে তা খানিকটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে। গত দুই সপ্তাহে বাড়লেও আবারও কমতে শুরু করেছে ডিমের দাম। তবে স্থিতিশীল রয়েছে মাছ, মাংস ও মুরগির দাম। বাজারে নতুন চাল আসায় কমতে শুরু করেছে চালের দামও। তবে পুরোনো চাল বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (২৩ মে) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সেগুনবাগিচা বাজারে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সবজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকার মধ্যে। আবার কোনো কোনো সবজি নেমে এসেছে ৪০ টাকায়। কিছু সবজি ৮০-৯০ টাকা থেকে কমে প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তবে টমেটো ও পেঁপের দামও কিছুটা বেড়েছে। 

সবজি বিক্রেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, গ্রীষ্ম মৌসুমের সবজির সরবরাহ বাড়ার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে। পাইকারি বাজারেও সব সবজির দামই কমেছে। যার প্রভাব ক্রেতারাও স্বস্তি পাচ্ছেন। 

বাজারগুলোতে বেগুন প্রকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি কেজিতে ৫০ টাকা কমে ৬০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর মুখি ১০০ টাকা, সাজনা ১০০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, কাঁচা আম ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

বাজারে শীতকালীন সবজি সিম ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি, ফুলকপি ছোট ৪০ টাকা পিস, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। লেবুর হালি ১০ থেকে ১৫ টাকা, ধনেপাতা ২৮০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক ১৫ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা ও ডাটা শাক দুই আঁটি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।  

সেগুনবাগিচা বাজারে আসা ক্রেতা রুহুল আমিন বলেন, গত রোজার পর থেকে সবজির চড়া দামের কারণে কেনা কমিয়ে দিয়েছিলাম। এখন দাম কমায় কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি। এটা কত দিন স্বস্তির থাকে সেটাই দেখার বিষয়। কারণ সামনে বর্ষা মৌসুম আসছে। 

এদিকে হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছিল ডিমের দাম। গত সপ্তাহে ডিমের দাম বেড়ে প্রতি ডজন ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে ডিমের বাজারে স্বস্তি ফিরছে। এখন ১৩৫-১৪০ টাকা ডজন হিসেবে ডিম বিক্রি করতে দেখা গেছে।

একই সঙ্গে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বাজারভেদে ১৬০-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও ব্রয়লার মুরগির বাজারদর ১৭০ টাকার আশপাশে ছিল। সবজি, ডিম ও নিম্ন আয়ের মানুষের পছন্দের প্রোটিনের সোর্স হিসেবে পরিচিত ব্রয়লার মুরগির দাম নাগালের মধ্যে থাকলে সীমিত আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি স্বস্তিতে থাকে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ২০ টাকা কম। একইভাবে কমে সোনালী মুরগি প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির বিক্রেতা আনিস বলেন, বাজারে এতো সস্তা দামে মুরগি দীর্ঘদিন পরেই বিক্রি হচ্ছে। এখন মুরগি বিক্রি করে খামারিদের প্রচুর লোকসান হচ্ছে। দাম ২০০ টাকা কেজির কাছাকাছি থাকা ভালো।

ডিম, মুরগি, চাল ছাড়া অন্যান্য পণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের দাম আগের মতোই রয়েছে। রাজধানীর বড় বাজারগুলোতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় এবং পাড়ামহল্লায় ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু ২০–২৫ টাকা, দেশি রসুন ১২০–১৪০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মুদি বাজারে তেল চিনি ডালের দামে খুব একটা পার্থক্য দেখা যায়নি। 

এদিকে মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। এসব বাজারে প্রতি কেজি শিং চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুই দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙাস ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি ২২০ টাকা, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বড় বাইম ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে ৮০০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, কাজলি মাছ ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

এসব বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও খাসির মাংস ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  

এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সরু বা মিনিকেট চালের দাম কেজিতে আরও ১–২ টাকা কমেছে। বোরো ধানের নতুন চাল বাজারে আসায় এ চালের দাম কমতে শুরু করেছে। খুচরা পর্যায়ে বেশির ভাগ মিনিকেট চালের কেজি এখন ৭৫ টাকার আশপাশে। গতকাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা দোকানে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর প্রভৃতি ব্র্যান্ডের নতুন মিনিকেট চাল ৭৫ টাকা ও রসিদ মিনিকেট চাল ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম ৮২ টাকা। মাসখানেক আগেও প্রতি কেজি পুরোনো মিনিকেট চালের দাম ছিল ৮৫ টাকার বেশি। এ ছাড়া নাজিরশাইল চাল মান ভেদে ৮০ থেকে ৯৫ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৫৮ টাকা ও স্বর্ণা ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও এসব চালের দাম একই ছিল।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়