ছবি : আপন দেশ
রমজান মাস শেষ হওয়ার পর থেকেই বাড়ছিল সব ধরণের সবজির দাম। চড়া দামে সবজি কিনতে কিনতে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস উঠছিল। অবশেষে গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় বাজারে তার প্রভাব পড়েছে। গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজিতে প্রায় ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে প্রায় ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
অপরদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে সোনালি মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। এ ছাড়া পুরনো মিনিকেট চাল আগের দামে বিক্রি হলেও কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে বাজারে নতুন আসা মিনিকেট।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১৬ মে) সকালে রাজধানী বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিন সকালে রাজধানীর কমলাপুর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, শসা ৬০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ৭০ টাকা, বেগুন (গোল) ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে প্রতি কেজি ধন্দুল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৫০ টাকা, কলা প্রতি হালি ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কঁচুর লতি প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৭০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় আজকের বাজারে সবজির দাম কিছুটা কম। রোজার ঈদের পর সবজির দাম খুব বাড়তি হয়ে গিয়েছিল, বাজারে সে সময় ৮০ টাকা ১০০ টাকার নিচে বলতে গেলে সবজিই ছিল না। সে তুলনায় আজ বাজার কিছুটা কম। ৫০ থেকে ৬০ টাকার ঘরে বাজারের সবজিগুলো আজ পাওয়া যাচ্ছে। তবে দুই একটি সবজি এখনও ৮০ টাকা, ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে দাম বেড়েছে ৫ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৪০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
তবে ঊর্ধ্বমুখী দেখা গেছে ডিমের বাজার। প্রতি ডজনে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০-১৪০ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ১৮০-২০০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে তুলনায় পাড়া মহল্লার দোকানগুলোতে ডজন প্রতি আরও ৫-১০ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, গরমে ডিম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম না বাড়লেও বেড়েছে সোনালি মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি সোনালি মুরগি ২৪০-২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০০-৩১০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৭৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাংস বিক্রেতারা বলছেন, কোরবানির বাজারে ভালো দামের আশায় সারা দেশের মানুষ এখন গরু বিক্রি কমিয়ে দিয়েছেন, যারাও বিক্রি করছেন তাদের কাছ থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
মাছের দামও অনেকটা আগের মতোই রয়েছে। প্রতি কেজি চাষের তেলাপিয়া ২২০-২৫০ টাকা, পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকা, রুই ৩৫০-৪০০ টাকা, কৈ ৩০০-৩২০ টাকা ও পাবদা ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
পুরনো চালের দাম উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল থাকলেও বাজারে নতুন আসা মিনিকেট চাল তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে খুচরা দোকানে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর ও রসিদ প্রভৃতি ব্র্যান্ডের নতুন মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেটের মধ্যে মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের চালের দাম অবশ্য আরেকটু বেশি। প্রতি কেজি মোজাম্মেল চাল এখন ৮২-৮৪ টাকায় বিক্রি হয়। মাসখানেক আগে এ চালের কেজি ১০০ টাকার আশপাশে ছিল।
অন্যান্য চালের মধ্যে মানভেদে নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৫৮ টাকা ও স্বর্ণা ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাসমতি চালের দামও আগের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে ৯৫ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































