Apan Desh | আপন দেশ

ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার নেপথ্য কাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:৩৩, ১২ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ০১:৩৬, ১২ জুলাই ২০২৫

ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার নেপথ্য কাহিনী

ছবি সংগৃহীত

জধানীর মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঢাকা-৭ আসন থেকে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির এমপি মনোনয়নপ্রত্যাশী ইসহাক সরকারের চাঁদার লোভের বলি হয়েছেন সোহাগ।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই এলাকা থেকে ৬ লাখ টাকা করে চাঁদা তুলতেন তিনি। সম্প্রতি চাঁদার পরিমাণ দ্বিগুণ নির্ধারণ করে মহিনকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি সোহাগ জানার পর ইসহাক গ্রুপের হাত থেকে বাঁচতে লালবাগের আরেক বিএনপি নেতা হামিদুর রহমান হামিদের গ্রুপে সম্পৃক্ত হতে চেষ্টা চালান। এতে খেপে যান ইসহাক এবং সোহাগকে হত্যার জন্য মহিনকে কাজে লাগান।
এরপরই বুধবার সন্ধ্যার দিকে মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও পাথরের আঘাতে নৃশংসভাবে ব্যবসায়ী সোহাগকে হত্যা করা হয়। এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন—যুবদল নেতা মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিন। বাকি দুজনের নাম এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ প্রকাশ করেনি। বিষয়টি নজরে আসার পর বিএনপির পক্ষ থেকে তাত্ক্ষণিকভাবে দলের জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর অংশ হিসাবে যুবদল নেতা রজ্জব আলী পিন্টু ও সাবাহ করিম লাকিকে দল থেকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন নিন্দা ও জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেয়। এছাড়া হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা, জগন্নাথ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রাতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীসহ সর্বস্তরের জনতা। 

নেপথ্যে বিএনপি নেতা ইসহাক

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ আমলে মিটফোর্ড এলাকায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলতেন যুবলীগ-ছাত্রলীগসহ সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। চব্বিশের গণ-অভু্যত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে বিএনপি নেতা ইসহাক এই চাঁদার নিয়ন্ত্রণ নেন। 
পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনায় সিরিয়াস ব্যবস্থা নেওয়ার পরও বিচ্ছিন্ন এ ঘটনার দায় বিএনপির ওপর চাপানো অপরাজনীতি। এটা নোংরা রাজনীতির চর্চা।

জামায়াতের নিন্দা

এ হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার রাতে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে মাথায় পাথর মেরে শত শত মানুষের সামনে এই হত্যার ঘটনা আইয়ামে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে। 

এ নির্মম দৃশ্য জাহেলিয়াতের লোমহর্ষক নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতাকেই যেন স্মরণ করিয়ে দেয়। পাশবিক এই হত্যার ঘটনায় মানুষ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। এভাবে পাশাবিক কায়দায় মানুষ হত্যা সভ্যসমাজে বিরল। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় এনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। 

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এছাড়া পৃথক বিবৃতিতে এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচার দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণসংহতি আন্দোলন।

আপন দেশ/এবি

​​​

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়