Apan Desh | আপন দেশ

বাজারে বৃষ্টির প্রভাব, কাঁচা মরিচের ঝাঁজে ক্রেতার চোখে পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ১১ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ১৬:০৫, ১১ জুলাই ২০২৫

বাজারে বৃষ্টির প্রভাব, কাঁচা মরিচের ঝাঁজে ক্রেতার চোখে পানি

ছবি : আপন দেশ

কোরবানির ঈদের পর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল চালের বাজার। গত সপ্তাহে বেড়েছিল প্রায় সব ধরণের সবজির দাম। এবার দাম বৃদ্ধির তালিকায় যোগ হলো মাছ এবং বয়লার মুরগিও। তবে সব থেকে বেশি বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। অতি জরুরি এ কাঁচা পণ্য ত্রিপল সেঞ্চুরি পেরিয়ে গেছে। এতে চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা। 

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, টানা তিন দিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বাজারে শাকসবজি ও অন্যান্য নিত্যসামগ্রীর সরবরাহও কিছুটা কমেছে। এ কারণে বাজারে শাকসবজি ও অন্যান্য নিত্যসামগ্রীর সরবরাহও কিছুটা কমেছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে।

সাপ্তাহিক ছটির দিন শুক্রবার (১১ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, বৃষ্টির অজুহাতে সব ধরনের সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। 

তবে বিক্রেতারা জানান, চার দিন আগেও খুচরায় সাধারণ ও ভালো মানের কাঁচা মরিচের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা। সে হিসেবে খুচরায় দাম বেড়েছে প্রায় আড়াই থেকে তিন গুণ। বর্তমানে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়। এছাড়া বেগুনসহ একাধিক সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।

বিক্রেতাদের দাবি আষাঢ় মাসে ক্ষেতে সবজির চাষ কম থাকে। কিছু অঞ্চলে বন্যা হয়েছে। যে কারণে সরবরাহ ঘাটতি। পাশাপাশি পরিবহন ব্যয়ও বেড়ে গেছে। যে কারণে সবজির দাম বেড়েছে। এদিন কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, টমেটো প্রতি কেজি ১২০, বেগুন প্রকারভেদে ৮০ থেকে ১৪০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, ঝিঙের কেজি ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাঁচামরিচের কেজি ৩২০ টাকা, কুমড়া ৪০, পটল ৫০, কচুর মুখি প্রতি কেজি ৬০ করে বিক্রি হতে দেখা গেছে। কচুর লতি ৮০ টাকা,  কলা প্রতিহালি ৪০-৪৫ টাকা, লাউ প্রতিপিস ৬০, ঝিঙা ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

তবে আলু, পেঁয়াজ, রসুনের দামে পরিবর্তন দেখা যায়নি। দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি মানভেদে ৫৫-৬০ টাকা, দেশি আদা ১৩০-১৫০ টাকা, দেশি রসুন ১২০-১৫০ টাকা, আমদানি করা রসুন ১৯০-২০০ টাকা, দেশি মসুর ডাল (চিকন দানা) ১৪০ টাকা, আমদানি করা মসুর ডাল (মোটাদানা) ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

ঊর্ধ্বমূখী মুরগি বাজারেও। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬৫–১৭০ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহেও সেটি ছিল ১৪৫–১৫০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ কেজিতে ১৫–২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সোনালি মুরগির দামও বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৮০ টাকা। তবে স্থিতিশীল রয়েছে ডিমের বাজার। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।

মাছের দামও কিছুটা বাড়তি। বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টির কারণে বাজারে মাছের সরবরাহ কিছুটা কম রয়েছে। এ ছাড়া সাধারণ সময়ে যে দামে রুই, পাঙাশ, শিং, কই, পাবদা মাছ বিক্রি হয়, আজ একই মাছ কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে রুই ও কাতল বিক্রি হচ্ছে ৩০০–৩৪০ টাকা কেজিতে। পাবদা ৩৫০–৪০০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০–৭০০, টেংরা ৬০০–৭০০, শিং ৪০০–৪৫০, কৈ ২০০–২২০ এবং তেলাপিয়া–পাঙ্গাস পাওয়া যাচ্ছে ১৮০–২০০ টাকায়। দেশি শিং ও কৈ মাছের দাম অবশ্য এখনও অনেক বেশি—প্রতি কেজি যথাক্রমে ১২০০ ও ১০০০ টাকা। পাঙাশ ২২০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৪০০ টাকায়। 

এদিকে এখনও রাজধানীর অধিকাংশ পরিবারে কোরবানির মাংস আছে। সে কারণে গরু, খাসি ও ছাগলের মাংসের দোকানগুলোতে এখনো ক্রেতার অভাব। মাংস ব্যবসায়ী ছানোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের পর এমনটা হতেই পারে, তবে এবার একটু বেশি সময় ধরে লোকজন মাংস কিনছে না। দাম কমেনি—গরু ৭৫০–৭৮০, খাসি ১১০০ আর ছাগল ১০০০ টাকায় বিক্রি করছি। কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। যারা কোরবানি দেয়নি, তারাও মাছ-মুরগিতে চলে গেছে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়