ছবি : আপন দেশ
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এক নবজাতক কন্যাসন্তানকে রেখে পালিয়ে গেছেন তার অভিভাবকরা। শিশুটির পাশে একটি চিরকুট যাতে লেখা আছে মায়ের ধর্মীয় পরিচয় এবং পরিস্থিতির বিবরণ। নবজাতকটি বর্তমানে হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ডে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে সুস্থ আছে।
শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) ঘটনাটি জানাজানি হলে শিশুটিকে দত্তক নিতে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, নার্স, ব্যবসায়ী ও বিসিএস ক্যাডারসহ অন্তত ২০০ জন যোগাযোগ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।
অপরদিকে শিশুটিকে দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের নবজাতক ইউনিটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিশুটিকে ওয়ার্ডের বেড থেকে নেয়া হয়েছে ডক্টরস রুমে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় ওই নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্ট্রারে ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে, মা ইনছুয়ারা, বাবা শাহিনুর, আলাদিপুর, ফুলবাড়ী।
এ বিষয়ে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক গোলাম আহাদ বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পঞ্চাশোর্ধ্ব এক দম্পতি শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তারা নিজেদের শিশুর নানা-নানি হিসেবে পরিচয় দেন। সেসময় চিকিৎসক শিশুটির মায়ের খোঁজ করলে, তারা জানান মা নিচে আছেন। মাকে নিয়ে আসতে বললে, ওই দম্পতি বেড়িয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর শিশু ওয়ার্ডের বাইরে একটি বেডে নবজাতককে দেখে অন্যরা বিষয়টি চিকিৎসকদের জানান।
আরও পড়ুন<<>>‘৭ নভেম্বরের চেতনায় ধানের শীষের ভোট বিপ্লব ঘটাতে হবে’
তিনি আরও বলেন, পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির মা ও স্বজনদের পাওয়া যায়নি। পরে শিশুটির বিছানায় রেখে যাওয়া একটি বাজারের ব্যাগে কিছু ওষুধ, ডায়াপার, জামা-কাপড় ও একটি চিরকুট পাওয়া যায়। ওই চিরকুটে লেখা রয়েছে, আমি মুসলিম। আমি একজন হতোভাগী। পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে বাচ্চা রেখে গেলাম। দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন। বাচ্চার জন্মতারিখ ৪ নভেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার। এগুলো সব বাচ্চার ওষুধ।
শিশুটির বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে গোলাম আহাদ বলেন, স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের যে সময়কাল, তার আগেই শিশুটির জন্ম হয়েছে। বর্তমানে সুস্থ আছে। ফটোথেরাপি দেওয়া হয়েছে। শিশুটিকে ওয়ার্মারে রাখা হয়েছে। এছাড়াও হাসপাতালে অবস্থানরত অন্য মায়েদের কাছ থেকে বুকের দুধ খাওয়ানো হচ্ছে।
ডক্টরস্ রুমে শিশুটির দেখভাল করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. গোলাম আহাদ, ডা. সানাউল্লাহ ও ডা. পল্লব কুমার দাস।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. সানাউল্লাহ জানান, শিশুটির মা ও স্বজনদের অনুসন্ধান চলছে। অপরদিকে এই শিশুটিকে দত্তক নেয়ার জন্য কমপক্ষে ২০০ জন যোগাযোগ করছেন। শিশুটির স্বজন না পাওয়া গেলে শিশুটিকে কোথায় বা কার কাছে দত্তক দেয়া হবে সে বিষয়ে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। তবে যারা দত্তক নিতে চাইছেন, তাদের মধ্যে চিকিৎসক, নার্স, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন। যারা শিশুটিকে নিতে চাচ্ছেন তারা সবাই নিঃসন্তান।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































