
ছবি: আপন দেশ
পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে দেশের উত্ততরের জেলা বগুড়ার সারিয়াকান্দি-সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, যমুনার পানি বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আগামী ৩ দিনের মধ্যেই পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে নদীতীরবর্তী এলাকায় বন্যার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রতিবছরই বগুড়া সারিয়াকান্দিসহ তিন উপজেলার বাসিন্দারা ২ থেকে ৩ বার যমুনা এবং বাঙালি নদীর বন্যার শিকার হয়। এসময় তারা উঁচু কোথাও, বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্র বা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধে আশ্রয় গ্রহণ করেন। বিশালাকৃতির গো চারণভূমি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। এ সময়গুলোতে তারা তাদের গবাদিপশুর গো খাদ্য সংকটে থাকেন। টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট তৈরি হয়।
সেসঙ্গে রান্না করার মতো জায়গা না থাকায় খাবার সহ নানান সমস্যা ভোগেন তারা। গত বছরগুলোতে আগস্ট মাসের মধ্যেই বন্যা হলেও এ বছর এখনো বন্যাকবলিত হননি এলাকাবাসী। তবে গত মে মাসে যমুনার পানি একবার বিপৎসীমার কাছাকাছি উঠেছিল কিন্তু অতিক্রম করেনি।
সারিয়াকান্দিতে কয়েকদিন ধরেই যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এ উপজেলায় সর্বশেষ সোমবার থেকে যমুনার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেদিন পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এ উপজেলার পানি ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে যমুনা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৫ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ গত তিন দিনে যমুনার পানি মোট ৩৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলায় এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৬ দশমিক ২৫ মিটার। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ২৪ ঘণ্টায় যমুনার নদীর পানি ২১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৯১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন<<>>তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, প্লাবিত ২০ গ্রাম
তারা জানিয়েছেন, আগামী তিন দিনের মধ্যেই পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে।
বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, উজানের ভারী বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং আগামী তিন দিনের মধ্যেই পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অথবা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আমাদের তথ্য অনুযায়ী, এ মাসের শেষের দিকে অথবা সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই বগুড়ায় যমুনা নদীতে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান বলেন, বন্যার আশঙ্কা থাকলেও এলাকাবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বন্যা মোকাবিলায় আমাদের আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপজেলায় বন্যা কবলিত এলাকাবাসীর জন্য বেশকিছু আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পানিতে আক্রান্ত এলাকাবাসীর ত্রাণ সহায়তার জন্য বগুড়া জেলার সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।