
কাদের মির্জার সঙ্গে আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদ
রাজধানীর গুলশানে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজিকালে গ্রেফতার আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদ ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জার অস্ত্রধারী ক্যাডার। বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র কাদের মির্জার সঙ্গে তার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে। ছবিতে কাদের মির্জার পাশে তাকে ফুলের তোড়া হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
গণঅভ্যুত্থানের আগে ফ্যাসিষ্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের ক্যাডার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা বনে যান রিয়াদ। তিনি সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত আহবায়কের পদ পান। রিয়াদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাত্রপ্রতিনিধির দায়িত্বে আছেন বলেও জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেনবাগের আবদুল রাজ্জাক সোলায়মান রিয়াদ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার পলাতক মেয়র কাদের মির্জার অস্ত্রধারী ক্যাডারদের একজন। ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পূর্ব পর্যন্ত কাদের মির্জার কাছে তার অবাধ যাতায়াত ছিল।
এরপর দিনমজুর ও কখনো রিকশাচালক বাবার ছেলে রিয়াদের উত্থান হয় ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয়ে। ৫ আগস্টের পর বদলাতে থাকে তার জীবন-জীবিকা। সাধারণ পোষাকের বদলে আসে দামি ব্র্যান্ডের শার্ট-প্যান্ট, পোশাক-আশাক। গ্রামের বাড়িতে তৈরি করে দৃষ্টিনন্দন ডুপ্লেক্স বাড়ি। গেল কুরবানির ঈদে লাখ টাকা দামের গরু কুরবানি দিয়েছে রিয়াদ, যা তাদের পরিবারের ইতিহাসে এটাই প্রথম।
এলাকাবাসী রিয়াদের উত্থান নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত নানা সন্দেহ প্রকাশ করে আসছিলেন। তাদের ভাষ্যমতে রিয়াদের আয়-উপার্জনের দৃশ্যমান কোনো উৎস ছিল না। অথচ খুব অল্প সময়েই বিত্ত-বৈভবে এলাকায় প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। তিনি নিজেকে পরিচয় দেন একজন ছাত্রপ্রতিনিধি ও সমন্বয়ক হিসাবে।
রিয়াদের চাচা জসিম উদ্দিন জানান, তার বড় ভাই ও বাবা দুজনই রিকশা চালাতেন। বাবা বয়সের কারণে এখন রিকশা চালান না। বড় ভাই আবু রায়হানও এখন রিকশা চালান না, তবে কৃষিকাজ করেন। গত দুই-আড়াই মাস আগে ভাতিজা রিয়াদ বাড়িতে পুরাতন ঘরের জায়গায় পাকা ভবন নির্মাণ শুরু করেন। গত সপ্তাহে ছাদের ঢালাই হয়েছে। বাড়িতে ওই ঘরের ভিটি ছাড়া তার ভাইয়ের অন্য কোনো জায়গা নেই।
প্রসঙ্গত, সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে রোববার (২৭ জুলাই) আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও তার সহযোগী কাজী গৌরব অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি শাম্মি আহম্মেদের বাসায় যায়। ৪০ লাখ টাকা না দিলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। পুলিশকে বিষয়টি জানালে গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রিয়াদসহ পাঁচ আসামিকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে এবং ওই সময় কাজী গৌরব অপু দৌড়ে পালিয়ে যায়।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।