Apan Desh | আপন দেশ

পটুয়াখালীতে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, জনজীবনে চরম দুর্ভোগ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:৪০, ৮ জুলাই ২০২৫

পটুয়াখালীতে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, জনজীবনে চরম দুর্ভোগ

ছবি: আপন দেশ

গত চার দিনের টানা ভারী বর্ষণে পটুয়াখালী জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক জলাবদ্ধতা। প্লাবিত হয়েছে জেলার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। সমুদ্র বন্দর এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বলবৎ রয়েছে। ফলে উপকূলীয় এলাকায় উত্তাল রয়েছে সাগর। শত শত মাছ ধরার ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে এসেছে।

সোমবার (০৭ জুলাই) রাত থেকে একটানা ভারী বর্ষণের ফলে পটুয়াখালী পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। হাঁটুপানিতে ডুবে গেছে নতুন বাজার, সদর রোড, চরপাড়া, লতিফ স্কুল সড়ক, আদালতপাড়া, নাইয়াপাড়া, সবুজবাগ, জুবিলী রোড, মহিলা কলেজ এলাকা, কালেক্টরেট স্কুল, কলেজ রোড, এসডিও রোড, পোস্ট অফিস সড়ক, তিতাস সিনেমা হল সংলগ্ন এলাকা ও পুরানবাজার কলাতলা।

ঘরবাড়ি, দোকানপাটেও ঢুকে পড়েছে পানি। শহরের অনেক বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী জানান, প্রতি বছর একই পরিস্থিতি হয়, কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান নেই।

একজন দোকানদার বলেন, সকালে দোকান খুলে দেখি, পানি ঢুকে সব নষ্ট করে দিয়েছে— টিভি, পাখা, কাপড় কিছুই বাঁচেনি। বারবার এমন হলে কীভাবে ব্যবসা করব?

জলাবদ্ধতার কারণে শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি ছিল কম। বিশেষ করে শেরেবাংলা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, শ্রেণিকক্ষ পানিতে ডুবে যাওয়ায় পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি।

অফিসগামী মানুষ ও শিক্ষার্থীদের পোহাতে হয়েছে চরম ভোগান্তি। পায়ে হেঁটে, রিকশায় কিংবা নৌকায় পার হতে হয়েছে অনেককে। রিকশা চলাচল প্রায় বন্ধ থাকায় বাড়তি দুর্ভোগে পড়েছে দিনমজুর শ্রেণির মানুষ।

সাগরে এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাছ ধরতে পারছেন না জেলেরা। অনেকেই ট্রলার নিয়ে তীরে নিরাপদ আশ্রয়ে আছেন। আর যাঁরা ঘাটে ফিরেছেন, তারাও তেমন ইলিশ পাননি বলে জানিয়েছেন।

এক জেলে বলেন, ভরা মৌসুমেও সাগরে যেতে পারছি না। হাতে কাজ নেই, ঘাটে অলস সময় কাটাচ্ছি।

পটুয়াখালী পৌরসভার কর্মকর্তারা জানান, শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে। ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছে। তবে টানা বৃষ্টির কারণে পানি দ্রুত নামছে না।

পৌরসভার এক প্রকৌশলী জানান, নিম্নাঞ্চল হওয়ায় পানি জমে থাকছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে।

জেলার চরাঞ্চলেও স্থায়ী জলাবদ্ধতা শুধু শহর নয়— জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল ও গ্রামীণ নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত। ক্ষেতখামার পানির নিচে। মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে উঁচু স্থানে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চালু করা হবে।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়