ছবি: আপন দেশ
বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টুকে ‘পরিকল্পিত ভাবে হত্যা’ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার সহধর্মিণী সাবেক মহিলা কাউন্সিলর নাসিমা আক্তার কল্পনা।
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, নাসিরউদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টুকে কারাগারে হত্যা এবং ৫৭ জন সাহসী সেনা কর্মকর্তার নির্মম হত্যাকাণ্ডের মামলায় স্বাধীন তদন্ত কমিশন কর্তৃক প্রমাণিত অপরাধী তৎকালীন এসবি প্রধান, বর্তমান আইজিপি বাহারুল আলমকে অনতিবিলম্বে অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আওতায় আনতে হবে।
রোববার (০৭ ডিসেম্বর) ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নাসিরউদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা। এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে ‘শহীদ পিন্টু স্মৃতি সংসদ’নামের একটি সংগঠন।
আরও পড়ুন<<>>শিক্ষাঙ্গণে ছাত্রদলের পদচারণা বাড়াতে হবে: মির্জা ফখরুল
নাসিমা আক্তার কল্পনা বলেন, আমি বহুবার বলেছি–আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। স্বাধীন তদন্ত কমিশন এখন প্রমাণ করেছে যে এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হাইকোর্টের চিকিৎসার নির্দেশ অমান্য করে তাকে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়। রিমান্ড ও নির্যাতনের কারণে তার চোখ নষ্ট হয়ে যায়। থেরাপির জন্য আদালতের আদেশ থাকলেও তা পালন করা হয়নি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার পরিবারের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া হয়, এমনকি সন্তানের পড়াশোনার টাকাও এনবিআর থেকে তুলে নেয়া হয়।
নাসিমা আক্তার কল্পনা বলেন, নাসিরুদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু একটি দেশের জন্য, একটি দলের জন্য তিনি জীবন দিয়েছেন। তিনি কখনও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। তিনি পরিবার ও ম্যাডাম খালেদা জিয়ার একজন আদর্শ সৈনিক ছিলেন। ষড়যন্ত্র করে তাকে ২০০৯ সালের জুন মাসে হাইকোর্ট চত্বর থেকেই গ্রেফতার করা হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, তখনকার সিআইডি প্রধান কাহার আকন্দ তাকে সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে যান এবং পরবর্তীতে উত্তরা টিএফ সেলে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে পিন্টুকে ভয়াবহ নির্যাতনের মুখে ফেলে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছিল।
নাসিমা আক্তার কল্পনার বলেন, আমি যখন টিএফ সেলে যাই ওষুধ ও কাপড় দিতে, তখন আমাকে গেট থেকেই ফিরিয়ে দেয়া হয়। আমার সাথে কথা বলতে দেননি। পিন্টুকে আয়নাঘরসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে টর্চার করা হয়। তাকে বারবার বলানো হয়েছে যে বিএনপি নেতারা পিলখানা হত্যায় জড়িত।
এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন নাসিমা আক্তার কল্পনা। কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি আরও অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, তৎকালীন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারদলীয় প্রভাবশালী নেতা তাপস ও হাজী সেলিম বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে তাদের পরিবারকেও নির্যাতন করেছে। তার ভাইকে অপহরণ করে নির্যাতন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্থানীয় নেতাকর্মীরা পিন্টুর জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়ে তাকে প্রতিদিন আটকে রাখার নির্দেশ দিত। এ জন্য তাকে কারাগার থেকে বের হতে দেয়া হয়নি।
কল্পনা বলেন, হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে পিন্টুকে রাজশাহী কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীন তদন্ত কমিশন তাদের প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে। এখন জানা যাচ্ছে তৎকালীন এসবি প্রধান বাহারুল আলম এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ভুয়া প্রতিবেদন তৈরি করে ঘটনাকে অন্যখাতে প্রবাহিত করেন বর্তমান আইজিপি। এ মিথ্যা তথ্য প্রদানের সঙ্গে যারা জড়িত আমি তাদের সবার বিচার চাই। এ হত্যাকাণ্ডে কারা কারা সম্পৃক্ত ছিল সব এখন পরিষ্কার। অন্তর্বর্তী সরকার যেন অবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় আনে।
প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন পিন্টুর ছেলে নাহাম আহম্মেদ, যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শহীদ পিন্টু স্মৃতি সংসদের সভাপতি রফিক আহমেদ ডলার, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির সেলিমসহ নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টুর হাত ধরে রাজনীতিতে আসা ছাত্রদল-যুবদল নেতারা।
আপন দেশ/এসআর
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।



































