ফাইল ছবি
ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ও গুম বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে আলোচনায় আসা ‘মায়ের ডাক’ এর সানজিদা ইসলাম তুলির বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মামলা করেছেন এক ব্যক্তি।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটির আবেদন করেন হোসাইন মোহাম্মদ আনোয়ার নামের ওই ব্যক্তি।
মূলত, তুলির বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননা ও ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাতের অভিযোগ আনার পাশাপাশি বাদির জবানবন্দি রেকর্ড করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন<<>>‘বিএনপি সরকারে এলে ব্যাংক ও বীমা খাতে বড় সংস্কার হবে’
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪১ অনুযায়ী ধর্ম চর্চার অধিকার হলো মানুষের মৌলিক অধিকার। বিয়ে ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি ও বিধান। পবিত্র কোরআনে সুরা নিসার ৩ নম্বর আয়াত অনুযায়ী একজন মুসলিম পুরুষ চারটি পর্যন্ত বিয়ে করতে পারবেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন মুসলিম পার্সোনাল ল (শরিয়ত) এপ্লিকেশন এক্ট, ১৯৩৭ ধারা (২) অনুযায়ী বিয়ে, ভরণপোষণ, তালাক ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিদ্যমান পক্ষরা যদি মুসলিম হয় সে ক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়াহ আইন প্রযোজ্য হবে। এ ক্ষেত্রে কোনও নাগরিক ধর্ম প্রতিপালন নাও করতে পারে কিন্তু ধর্মকে অপমান করা এবং ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করার অধিকার কারও নেই।
আরও বলা হয়, বিবাদী সানজিদা ইসলাম তুলি ইসলামে বিয়ে ইস্যুতে অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি ইসলাম ধর্মকে অপমান করেছেন এবং মুসলামদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করেছেন, যা দণ্ডবিধির ২৯৫(ক) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মূলত, গত ১৫ নভেম্বর একটি অনুষ্ঠানে চার বিয়ের বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন সানজিদা ইসলাম তুলি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, একজন পুরুষের ক্ষেত্রে চারটি বিবাহ করা যাবে, এ এখতিয়ার কি আমার বোনরা দিয়েছে কাউকে?
পরে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ইসলামে একজন পুরুষ সর্বোচ্চ চারটি বিয়ে করতে পারে। তবে কঠোর শর্ত হলো—প্রতিটি স্ত্রীকে সময়, অর্থ, অধিকার ও মর্যাদায় পূর্ণ সমান ন্যায়বিচার করতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে—ইসলাম নারীর সম্মান, অধিকার ও নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। তাই শুধুমাত্র আইনের একটি অংশ ধরে নয়, পুরো নির্দেশনা অনুসারে চলা জরুরি। সমাজের দায়িত্ব হলো নারীর সব অধিকার নিশ্চিত করা এবং তাদের প্রতি সম্মান বজায় রাখা।
তাই আমার বক্তব্য ছিল শুধু —আমাদের বোনদের ধোঁকা দিয়ে লুকিয়ে বিয়ে করা, তাদের হক থেকে বঞ্চিত করা এবং প্রতারণা করা ইসলামের শিক্ষা নয়। ইসলাম ন্যায়, স্বচ্ছতা ও আমানতের ওপর জোর দেয়, প্রতারণার ওপর নয়।
তুলি বলেন, দয়া করে আমার বক্তব্যকে ভুলভাবে বা ভিন্ন ব্যাখ্যায় উপস্থাপন করবেন না। আমি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান এবং ইসলামী মুল্যবোধে বিশ্বাসী। কেউ ধর্মীয়বোধে আঘাত পেলে আমি আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত।
উল্লেখ্য, ফ্যাসিবাদী শাসনকালে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারকে ঐক্যবদ্ধ করে মায়ের ডাক নামে একটি সংগঠন করেন তুলি। তিনি গুমের শিকার ব্যক্তিদের দাবি বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।
আপন দেশ/এসআর
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।



































