
ছবি : আপন দেশ
জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা শুধু জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একক দায়িত্ব নয়। এটি রাজনৈতিক দল, সিভিল সোসাইটি ও অন্যান্য সামাজিক-রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সম্মিলিত দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। রোববার (১৮ মে) জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সূচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আলী রীয়াজ বলেন, অনেক বিষয়েই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে এবং কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছানো গেছে। তবে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য এখনো রয়ে গেছে। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকেও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কিছু বিষয়ের পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব এসেছে। আমরা সে বিষয়গুলো পুনরায় আলোচনার সুযোগ রাখছি।
তিনি বলেন, আলোচনার টেবিলে যারা প্রতিনিধিত্ব করেন, তাদের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ফিরে গিয়ে পরামর্শ করতে হয়। আলোচনায় অনেক কিছুই উঠে আসে, যা পুনরায় মূল্যায়ন দাবি করে। এ প্রক্রিয়াটি আমরা অব্যাহত রেখেছি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, এ আলোচনার মধ্য দিয়েই আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় প্রবেশ করব। সবকিছু আজকের আলোচনায় মীমাংসা হয়ে যাবে, এমনটা ভাবা অবাস্তব। যদি পারতাম, সেটা নিঃসন্দেহে অধিকতর ইতিবাচক হতো।
আলী রীয়াজ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন খুব দ্রুত গতিতে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা একটি জাতীয় সনদের পথে এগিয়ে যেতে চাই। প্রাথমিক আলোচনাগুলো আগামী দুই এক দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারলে আমরা পরবর্তী ধাপে প্রবেশ করব।
তিনি যোগ করেন, সব ক্ষেত্রেই যে মতৈক্য তৈরি হচ্ছে তা নয়, অনেক ক্ষেত্রেই মতবিরোধ রয়েছে। তবে আমরা সেগুলোকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে এগোচ্ছি। প্রায় দুই মাস ধরে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আন্তরিক আলোচনার মধ্য দিয়ে এ পর্যায়ে এসেছি। এটা সহজ ছিল না। অনেক ত্যাগ, অনেক রক্তক্ষয়ের মধ্য দিয়ে আমরা এ আলোচনার টেবিলে এসেছি। যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের প্রতি আমাদের দায় ও দায়িত্ব রয়েছে—এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।
তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা শুধু জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একক দায়িত্ব নয়। এটি রাজনৈতিক দল, সিভিল সোসাইটি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই সম্ভব হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সকলে আন্তরিক থাকলে আমরা সফল হব।
বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং ড. ইফতেখারুজ্জামান।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের নেতৃত্বে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি এ টি এম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ এবং বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।