
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পতাকা
হঠাৎ করেই রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়েছে দুই প্রতিবেশি পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। এতে কয়েক শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। তারপর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি হয় তাদের মধ্যে। যা শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) শেষ হতে না হতেই ফের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিমান হামলার অভিযোগ উঠেছে। তাতে আফগানিস্তানের তিন ক্রিকেটারসহ অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন।
প্রাণহানির পর পাওয়া গেল স্বস্তির খবর। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান শুক্রবার ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির সময় আরও বাড়াতে রাজি হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনার জন্য কাতারের দেয়া মধ্যস্থতার প্রস্তাবে দোহায় বৈঠকের প্রস্ততি চলছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) শুরু হওয়ার কথা এ বৈঠক। দোহা আলোচনা থেকে কোনও সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বহাল রাখতে রাজি হয়েছে দুই পক্ষ। তিন পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং এক আফগান কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন।
পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মধ্যে কয়েকদিনের রক্তক্ষয়ী সীমান্ত সংঘাতের পর বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুই পক্ষ সাময়িকভাবে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি করে। সে যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কথা ছিল শুক্রবারই।
কিন্তু এদিন পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এই যুদ্ধবিরতি আরও ৪৮ ঘণ্টা বাড়াতে রাজি হয়। কাতারের রাজধানী দোহায় শান্তি আলোচনার জন্য একটি পাকিস্তানি প্রতিনিধিদল এরই মধ্যে সেখানে পৌঁছেছে। আফগান প্রতিনিধি দল শনিবার দোহায় পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পশতু ভাষার স্থানীয় টিভি নিউজ চ্যানেল আরিয়ানা নিউজকে আফগান তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, পাকিস্তান যতক্ষণ পর্যন্ত হামলা চালানো থেকে বিরত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত কাবুল তাদের বাহিনীকে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে।
গত শনি ও রোববার সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে লড়াইয়ে হতাহতের ঘটনার পর বুধবার আবার দুই পক্ষে নতুন করে লড়াই হয়েছিল। তারপরই প্রাথমিকভাবে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি করেছিল দুই পক্ষ।
আরও পড়ুন<<>>কান্দাহারে পাকিস্তানের বিমান হামলায় ৪০ আফগান নিহত
এ যুদ্ধবিরতি চলার মধ্যেই শুক্রবার আফগানিস্তানের সীমান্তের কাছে উত্তর ওয়াজিরিস্তানে আত্মঘাতী হামলায় ৭ পাকিস্তানি সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়ার পর দেশটির ক্ষমতায় ফেরা তালেবানের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে জঙ্গি হামলা বড় বাধা হয়ে আছে।
সম্প্রতি দু্ই দেশের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষের পেছনেও এ জঙ্গি সংশ্লিষ্টতাই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, তাদের দেশের ভেতর যে জঙ্গিরা হামলা চালাচ্ছে, আফগানিস্তান তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে।
ওদিকে, আফগান তালেবান সরকার পাকিস্তানে হামলা চালানো জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আঙুল তুলে বলছে, তারা আফগানিস্তান নিয়ে অপতথ্য ছড়াচ্ছে। সীমান্তে উত্তেজনা উসকে দিচ্ছে এবং আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা ও সার্বভৌমত্ব খর্ব করতে আইএসআইএস-সংশ্লিষ্ট জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে।
তবে ইসলামাবাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
দুই দেশের মধ্যে এর আগে ছোটখাট সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও চলতি মাসেই কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বাজে সংঘাত দেখা গেছে। এ সংঘর্ষ থামাতে সৌদি আরব ও কাতারকেও ছুটে আসতে হয়েছে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।