Apan Desh | আপন দেশ

তালেবানের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৪২, ৯ জুলাই ২০২৫

তালেবানের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা

আব্দুল হাকিম হাক্কানি ও হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা

আফগানিস্তানে তালেবানের দুই শীর্ষ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং প্রধান বিচারপতি আব্দুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি)। দেশটিতে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। 

মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আইসিসি জানায়, ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে দেশটির নারীদের প্রতি নিপীড়নমূলক নীতিমালা আরোপ করে দুই নেতা এমন অপরাধে যুক্ত ছিলেন—এমন বিশ্বাসের পক্ষে যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি রয়েছে।

আদালতের বিবৃতিতে বলা হয়, ক্ষমতায় আসার পর তালেবান সরকার নারীদের শিক্ষা, চাকরি ও চলাফেরার অধিকার হরণ করে। মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়। নারীদের কর্মস্থল ত্যাগে বাধ্য করা হয় এবং একাকী বাইরে যাওয়া কিংবা উচ্চস্বরে কথা বলাও নিষিদ্ধ করা হয়। এ নিষেধাজ্ঞাগুলো গোটা সমাজের ওপর চাপালেও নারীরা ছিল একক লক্ষ্য—শুধু তাদের নারী পরিচয়ের কারণেই।

আইসিসির ভাষ্য, এ নিপীড়নের ধরন আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় পড়ে। এর আগে জাতিসংঘও তালেবানের এসব পদক্ষেপকে ‘জেন্ডার অ্যাপার্থেইড’—অর্থাৎ লিঙ্গভিত্তিক বর্ণবাদের শামিল বলে চিহ্নিত করেছে।

তবে আইসিসির এ পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে তালেবান। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, আফগানিস্তান আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতকে স্বীকৃতি দেয় না। এ গ্রেফতারি পরোয়ানাকে ‘মুসলিম বিশ্বের প্রতি বৈরি মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ও অপমানজনক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা দাবি করে, ইসলামি শরিয়াহ এবং আফগান সংস্কৃতির আলোকে নারীদের অধিকার রক্ষার চেষ্টা করছে তাদের প্রশাসন।

তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা ২০১৬ সালে সংগঠনটির নেতৃত্বে আসেন। ২০২১ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সৈন্য প্রত্যাহারের পর তিনি তথাকথিত ‘ইসলামিক এমিরেট অব আফগানিস্তান’-এর নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। ১৯৮০-এর দশকে তিনি সোভিয়েতবিরোধী যুদ্ধে ইসলামপন্থি গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে লড়াই করেন।

অন্যদিকে, আব্দুল হাকিম হাক্কানি তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় তালেবানের প্রধান প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন তিনি।

এ দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে আইসিসির এ নজিরবিহীন পদক্ষেপকে আফগানিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়