
ফাইল ছবি
ভারতের দিল্লি পুলিশ এক ভারতীয় পরিবারকে আটক করে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। বিএসএফ-এর মাধ্যমে বাংলাদেশে তাদের পুশইন করা হয়। এরপর থেকে পরিবারের কোনো খোঁজ পাচ্ছে না পরিবারটির সদস্যরা।
পরিবারটির সদস্যরা জানান, দানিশ শেখ, তার স্ত্রী সুনালী খাতুন ও তাদের শিশুপুত্রকে ২৬ জুন বিএসএফ-এর মাধ্যমে বাংলাদেশে পুশইন করা হয়েছে। আটক হওয়া দানিশ শেখের বয়স ৩০ বছর। তার স্ত্রী সুনালীর বয়স ২৬ বছর ও তাদের সন্তানের বয়স ৮ বছর। দিল্লি পুলিশের হাতে আটক হওয়ার কয়েকদিন পর ৪ জুলাই দানিশ ফোন করে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি জানান, তাকে, তার স্ত্রী ও সন্তানকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এটাই ছিল তাদের শেষ যোগাযোগ। এরপর থেকেই দানিশ ও তার পরিবারের আর কোনো খোঁজ মেলেনি। তাদের মোবাইল নম্বর বন্ধ। কোথায় আছেন—তা জানেন না স্বজনরা।
দানিশ ও তার পরিবার চলতি বছরের রমজানে ঈদ উদযাপন করতে এসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার পাইকর গ্রামে। ঈদ শেষে মে মাসে তারা দিল্লিতে ফিরে যান।
ঘটনার পর দানিশের স্ত্রীর বাবা ভদু শেখ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন। তিনি জানান, আমি পাইকর থানায় ডায়েরি করেছি। আগামীকাল (মঙ্গলবার) আমরা কলকাতা হাইকোর্টে একটি রিট মামলা করব। পরিবারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস রিট আবেদন করা হয়েছে।
তারা জানান, তিনজন ভারতীয় নাগরিককে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হয়েছে। তাদের ভারতেই ফিরিয়ে আনতে হবে।
সুনালীর চাচাতো বোন রোশনী বিবি বলেন, আমরা দিল্লি পুলিশকে নাগরিকত্বের সব প্রমাণ দিয়েছি। ভোটার আইডি, আধার কার্ড, এমনকি জমির দলিলপত্রও জমা দিয়েছি। তবুও পুলিশ কিছুই গ্রহণ করেনি। আমরা বারবার অনুরোধ করেছি, কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া পাইনি। ঘটনার সময় দানিশ ও সুনালীর কন্যা একজন আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। তিনি এখনো ভারতে আছেন।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ অভিবাসী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড এ বিষয়ে আইনি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। সংস্থার চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম বলেন, এটা প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু বাংলা বলায় আমাদের অভিবাসী শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে টার্গেট করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা হেবিয়াস কর্পাস মামলায় পরিবারকে সহায়তা করব। আদালতের কাছে আবেদন করব যেন দানিশ ও তার পরিবারকে ভারতে ফিরিয়ে এনে আদালতে হাজির করা হয়। এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। গত মাসেই মহারাষ্ট্র পুলিশ সাতজন পশ্চিমবঙ্গের নাগরিককে ‘বাংলাদেশি’ বলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছিল। পরে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তাদের আবার ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়। দানিশ ও তার পরিবারের ক্ষেত্রেও একই রকম আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাদের স্বজনরা উদ্বিগ্ন। তারা এখন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রিয়জনদের ফিরে পাওয়ার আশায়।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।