ছবি : আপন দেশ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নির্বাচনে নারী প্রার্থীর সংকট দেখা দিতে পারে—এমন আশঙ্কা করছেন অনেকেই। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর ব্রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচারণার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে এখনো পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে কোনো নারী প্রার্থীর তেমন দেখা মেলেনি। হাতে গোনা এক-দুজন নারী শিক্ষার্থী প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া অনেক নারী শিক্ষার্থী এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। কেউ কেউ ইতোমধ্যে ছাত্রত্ব শেষ করেছেন। আলোচনায় রয়েছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে জেবিন, যিনি জুলাই আন্দোলনসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ইস্যুতে সক্রিয়ভাবে আওয়াজ তুলতে দেখা গেছে।
এদিকে ব্রাকসুর অনুমোদন পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় কোনো নারী শিক্ষার্থীকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি। এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন ছাত্রী হলের প্রভোস্ট ড. সিফাত রুমানা। তিনি বলেন, এত বড় একটি আয়োজন, কিন্তু সভায় কোনো মেয়ে নেই—এটা হতাশাজনক।
আরও পড়ুন<<>>এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ৩১ ডিসেম্বর
নারী নেতৃত্বের এ অনীহার কারণ জানতে চাইলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে জেবিন বলেন, অনেক সময় মেয়েরা মনে করে রাজনীতিতে যুক্ত হলে নেতিবাচক সমালোচনার মুখে পড়তে হবে। পরিবার থেকেও অনেকে নিরুৎসাহিত করে। ফলে অনেকেই এগিয়ে আসতে চায় না।
আরেক শিক্ষার্থী সায়মা আক্তার বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও গণতন্ত্রের চর্চা যে বন্ধ হয়ে যাবে, তা নয়। ছাত্র সংসদ গণতন্ত্রের অন্যতম মাধ্যম। কিন্তু নির্বাচনে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ তুলনামূলকভাবে কম। এর পেছনে ভয়, সংশয়, লজ্জা কিংবা সামাজিক প্রতিবন্ধকতা কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে অনীহা, সময় নষ্টের আশঙ্কা, পারিবারিক সীমাবদ্ধতা বা সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি—সব মিলিয়ে নারীরা অনেক সময় পিছিয়ে পড়ে। তবে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই পারে ব্রাকসু নির্বাচনের পথচলাকে আরও গতিশীল ও গণতান্ত্রিক করে তুলতে।
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মুসতানসির মুয়াজ বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের খুব বেশি সামনে না দেখা বা ব্রাকসু নির্বাচনে প্রার্থীতার আগ্রহ কম থাকার পেছনের অনেকটা দায় প্রতিনিধিত্বকারী শিক্ষার্থীদের এবং প্রশাসনের। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক পটেনশিয়াল নারী শিক্ষার্থী রয়েছে, তারা অনেক যোগ্যতা সম্পন্ন মেধাবী এবং প্রজ্ঞাবান। কিন্তু তাদেরকে কোন জায়গায় ডাকাই হয়নি! বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কয়েকটা টিমকে নিয়ে প্রশাসন মিটিং করে বা কোন আলোচনা করে সেখানেও কখনো নারী শিক্ষার্থীদের আহবান জানানো হয় না বা যাদেরকে ডাকা হয় তাদের ওই প্রবণতা থাকে না যে আমাদের নারী প্রজ্ঞাবান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিতে হবে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।




































