Apan Desh | আপন দেশ

৩০ বছরের কনসেশন চুক্তি সই করছে চট্টগ্রাম বন্দর-এপিএম টার্মিনালস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৩১, ১২ নভেম্বর ২০২৫

৩০ বছরের কনসেশন চুক্তি সই করছে চট্টগ্রাম বন্দর-এপিএম টার্মিনালস

ছবি: আপন দেশ

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে ডেনমার্কের প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালস। এপিএম টার্মিনালস বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বন্দর ও টার্মিনাল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান, যা ডেনমার্কের শীর্ষস্থানীয় শিপিং কম্পানি ম্যারস্ক গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান।

বুধবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি জানান, দীর্ঘ আলোচনার পর সরকারের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

আরও পড়ুন<<>>নতুন পে-স্কেলের ফ্রেমওয়ার্ক দেবে বর্তমান সরকার

চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, টার্মিনাল নির্মাণের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ২৫০ কোটি টাকা সাইনিং মানি দেবে। এটি হবে একটি বিশ্বমানের টার্মিনাল, যেখানে বর্তমানে তুলনায় দ্বিগুণ জাহাজ ভিড়তে পারবে এবং ৪০ শতাংশ কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, লালদিয়া টার্মিনাল হবে একটি বিশ্বমানের, স্মার্ট ও গ্রিন পোর্ট। এটি সপ্তাহে সাত দিন, ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে। এর ফলে কনটেইনার জট কমে যাবে, পণ্য পরিবহন সহজ হবে এবং লাইটার জাহাজে পণ্য আনার প্রয়োজন কমে যাবে।

তিনি আরও বলেন, এপিএম টার্মিনালস আমাদের জায়গায় জেটি ও টার্মিনাল নির্মাণ করবে এবং পরিচালনার দায়িত্বও নেবে। তবে মালিকানা থাকবে বন্দরের হাতে। ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তির মেয়াদ শেষে, পারফরম্যান্স ভালো হলে সময় বাড়ানো হবে; না হলে তারা টার্মিনাল সম্পূর্ণভাবে আমাদের কাছে হস্তান্তর করবে।

প্রকল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, যা সম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব অর্থায়নে হবে। এতে সরকারের কোনো খরচ হবে না, বরং আগামী তিন বছরে এ অর্থ বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ হিসেবে প্রবেশ করবে।

চৌধুরী আশিক আরও বলেন, এটি ইউরোপ থেকে বাংলাদেশের প্রথম বড় প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ, যা দেশের জন্য একটি মাইলফলক। শুধু ইউরোপ নয়, চীন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার মতো দেশের বন্দর পরিচালনার অভিজ্ঞতা নিয়ে এপিএম টার্মিনালস বাংলাদেশে আসছে। এর মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত হবে।

বন্দরটির কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়বে উল্লেখ করে বিডা চেয়ারম্যান জানান, টার্মিনাল চালু হলে বন্দরটির কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বছরে ৮ লাখ টিইইউ বাড়বে, যা বর্তমানের তুলনায় প্রায় ৪৪ শতাংশ বেশি। এটি ২০৩০ সালের মধ্যে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটি রাজস্ব ভাগাভাগি ভিত্তিতে পরিচালিত হবে, যেখানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) প্রতি কনটেইনারে নির্দিষ্ট ডলারভিত্তিক রাজস্ব পাবে। পাশাপাশি কর, শুল্ক ও সামুদ্রিক সেবা খাত থেকেও সরকারের আয় বাড়বে।

এপিএম টার্মিনালস বিশ্বমানের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও পরিবেশ নীতি অনুসরণ করবে, যা দুর্ঘটনা হ্রাস ও কর্মীদের কল্যাণ নিশ্চিত করবে। এ ছাড়া নির্মাণ ও পরিচালনা পর্যায়ে ৫০০ থেকে ৭০০ জনের সরাসরি কর্মসংস্থান এবং লজিস্টিকস, ট্রাকিং, স্টোরেজ ও স্থানীয় এসএমই খাতে হাজারো পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

আপন দেশ/এসআর

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়