Apan Desh | আপন দেশ

‘গত সরকারের সময়ে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:২৮, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘গত সরকারের সময়ে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে’

ফাইল ছবি

গত সরকারের সময়ে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে মাসিক বিশ্লেষণ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক খুরশিদ আলম। ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, ব্যাংক হিসাব জব্দ করা সবসময় সঠিক পদক্ষেপ নয়। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এ গভর্নর বলেন, কোনও দুর্নীতিবাজের সম্পদ থেকে যদি তার স্ত্রী-সন্তান স্বাধীন থাকেন, তবে তাদের হিসাব কেন জব্দ করা হবে? এতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর আস্থা কমে যাবে। ‘ব্যাংক হিসাব জব্দের বিষয়টি সীমিত রাখতে হবে এবং শুধু চিহ্নিত কয়েকজন দুর্নীতিবাজের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই-আগস্ট মাসের সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছিল কিছু ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা ও দক্ষতা রক্ষা করা না গেলে ভবিষ্যতেও নতুন ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ জন্ম নিতে পারে।

ফরাসউদ্দিন বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি যখন এক হয়ে যায়, তখন দেশে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’র মতো শক্তিশালী কোম্পানি গড়ে ওঠে। ইতোমধ্যে ১০-১৫টি এমন কোম্পানি চিহ্নিত হয়েছে। এদের শুধু সম্পদ জব্দ করলেই হবে না, বরং উদ্ধারকৃত সম্পদ সরকারের কোষাগারে যুক্ত করতে হবে।

আরও পড়ুন<<>>ইসলামী ব্যাংকের ২০০ কর্মী ছাঁটাই, ৪৯৭১ জন ওএসডি

সাবেক গভর্নর বলেন, গত সরকারের সময়ে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে— এ নিয়ে সন্দেহ নেই। তবে এ কারণে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। বর্তমান সরকার এখন পর্যন্ত সঠিক পথে আছে। তাই সাহসের সঙ্গে নীতি গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও শক্তিশালী করতে হবে এবং সবচেয়ে জরুরি হলো কর আদায় বাড়ানো।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একমাত্র দায়িত্ব নীতিনির্ধারণ। কিন্তু বাংলাদেশে পরিচালকেরা বরং ঋণ বিতরণে বেশি আগ্রহী হন। ঋণ বিতরণ ও নীতি প্রণয়ন কার্যক্রম আলাদা করার সুপারিশ করেন তিনি।

এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকলেও প্রবৃদ্ধি কমেছে এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম। মূল্যস্ফীতি এখনও বড় চ্যালেঞ্জ।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, অর্থ পাচার বন্ধ হয় না কোনও দেশেই। তবে বাংলাদেশ এখনও তা নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ। যারা বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছেন, তারা আগে থেকেই সেখানকার স্থায়ী আবাস গড়ে তুলেছেন। ফলে দেশের টাকা বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন।

বিআইজিডির ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো খন্দকার সাখাওয়াত আলী বলেন, অর্থ পাচার বন্ধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রকৃত অর্থে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। যারা টাকা পাচার করছে, তারাই আমাদের নাগরিক সমাজের অংশ। রাষ্ট্র কেন এটি বন্ধ করতে পারছে না, সেটি প্রশ্ন তুলতে হবে।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়