
সংবাদ সম্মেলন করেন আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম
দেশের ৩২ বিমা কোম্পানি বর্তমানে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ অবস্থানে রয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম। এর মধ্যে ১৫টি জীবন বিমা কোম্পানি ও ১৭টি সাধারণ বিমা কোম্পানি রয়েছে।
বুধবার (o২ জুলাই) রাজধানীর মতিঝিলে আইডিআরএ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। চেয়ারম্যান বলেন, কোম্পানিগুলোর আর্থিক কাঠামো, দাবি পরিশোধের সক্ষমতা, সম্পদ ও দায়সহ সার্বিক ব্যবসায়িক অবস্থা বিশ্লেষণ করে ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জীবন বিমা খাতের ৩৬টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৬টি ভালো অবস্থানে রয়েছে। বিপরীতে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে ১৫টি ও মধ্যম ঝুঁকিতে আরও ১৫টি প্রতিষ্ঠান। সাধারণ বিমা খাতের ১৭টি কোম্পানিও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলে শনাক্ত হয়েছে।
চালু বিমা কোম্পানিগুলোর নাম না জানালেও আইডিআরএ’র একটি অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি জীবন বিমা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে—ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, পদ্মা ইসলামী লাইফ, প্রাইম ইসলামী লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, সানলাইফ, গোল্ডেন লাইফ, বায়রা লাইফ, প্রগ্রেসিভ লাইফ, এনআরবি ইসলামিক লাইফ, ডায়মন্ড লাইফ, বেস্ট লাইফ, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ, যমুনা লাইফ ও স্বদেশ লাইফ।
বিমা দাবির টাকা পরিশোধ না করায় আস্থার সংকট
সংবাদ সম্মেলনে আইডিআরএ চেয়ারম্যান জানান, সময়মতো বিমা দাবির অর্থ পরিশোধ না করায় খাতটির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। বর্তমানে জীবন বিমা খাতে ৪৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিমা খাতে প্রায় ৪৭ শতাংশ দাবি বকেয়া রয়েছে।
তিনি বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ছাড়া এই খাতে আস্থা ফিরবে না। বিমা দাবির অর্থ দ্রুত পরিশোধ, অভিযোগ নিষ্পত্তি ও কোম্পানিগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নতুন আইন ও বিধি প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ব্যাংক খাতের মতো বিমা খাতেও ‘রেজ্যুলেশন ফ্রেমওয়ার্ক’ চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। এতে শুধু একীভূতকরণ নয়, অবসায়ন বা অধিগ্রহণের মতো কাঠামোগত সংস্কারও সম্ভব হবে।
জিডিপিতে বিমা খাতের অবদান কমছে
বিমা খাতের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০১০ সালে জিডিপির অনুপাতে বিমা খাতের অবদান ছিল ০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। যা ২০২৩ সালে কমে দাঁড়ায় ০ দশমিক ৪১ শতাংশে। ২০২৪ সালে তা আরও কমেছে।
তিনি জানান, ২০২৪ সালেই বিমা সংক্রান্ত ২৪ হাজার ৮৫২টি অভিযোগ পেয়েছে আইডিআরএ, যার অধিকাংশই দাবি পরিশোধ সংক্রান্ত। তবে জনবল সংকটের কারণে এসব তদারকিতে সমস্যা হচ্ছে। অনুমোদিত ১৬০টি পদের বিপরীতে বর্তমানে আইডিআরএতে কর্মরত আছেন মাত্র ১০৭ জন।
নিবন্ধন নবায়ন ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত
সম্প্রতি বিমা কোম্পানির নিবন্ধন নবায়ন ফি প্রতি হাজার টাকায় ১ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে আইডিআরএ। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের জনবল বাড়াতে হবে, ফলে ব্যয়ও বাড়বে। সবকিছু বিবেচনায় রেখেই নবায়ন ফি বাড়ানো হচ্ছে।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।