Apan Desh | আপন দেশ

রাজমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার, পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় হত্যা

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২:৩৮, ১৭ আগস্ট ২০২৫

রাজমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার, পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় হত্যা

নিহত মো. মাহফুজ

নোয়াখালী সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়ন থেকে মো. মাহফুজ (২৫) নামের এক রাজমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি বন্ধুর স্ত্রীকে পরকীয়া প্রেমে বাধা দেয়ায় মাহফুজকে হত্যা করা হয়েছে।

শনিবার (১৬ আগস্ট) উপজেলার কাজির চর গ্রামের হাসমত উল্যার বাড়ির ছায়েদুল হকের ঘর থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে, শুক্রবার দিবাগত রাতে বাড়ির রান্না ঘরের পিছনে পেয়ারা গাছের সঙ্গে বাধা অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।

নিহত মো. মাহফুজ উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের কাজির চর গ্রামের মো. ছায়েদুল হকের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ছিলেন।

নিহতের চাচা মো. মাফুউল্যা বলেন, আমার ভাতিজা মাহফুজের সঙ্গে প্রতিবেশী জয়নাল আবেদীনের ছেলে সোহাগ ও সবুজের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ছিল। তিন বছর পূর্বে সোহাগ সৌদি যাওয়ার সময় তার স্ত্রী ও পরিবারের খোঁজখবর রাখার জন্য বন্ধু মাহফুজকে অনুরোধ করে যান। সোহাগ বিদেশ পাড়ি দেয়ার পর মাহফুজ ও সোহাগের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। 

স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর থেকে সোহাগের স্ত্রী আছমা আক্তার টিকটক করতে শুরু করে। এ নিয়ে তাদের পরিবারে একাধিক বার কলহ তৈরী হয়। সাম্প্রতিক সোহাগের স্ত্রী আছমা আক্তার আমার ভাতিজা মাহফুজের ইমুতে তার করা টিকটক ও বিভিন্ন ভিডিও পাঠাতে থাকেন। গত ৫দিন পূর্বে মাহফুজের ছোট বোন তাজিনা আক্তার মাহফুজের মুঠোফোনে ও ভিডিওগুলো দেখে পরিবারের সদস্যদের জানান।

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, শুক্রবার সকালে মাহফুজের বাবা ছায়েদুল হক সোহাগদের বাড়ি গিয়ে বিষয়টি সোহাগের বাবা-মাকে জানান এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ থেকে পুত্রবধূকে বিরত রাখতে বলেন। একই দিন বিকালে সোহাগের স্ত্রী আছমা আক্তার ও ভগ্নিপতি শাহীন, ভাই সবুজ প্রতিবেশী আবদুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে মাহফুজের বাবা-মাকে গালমন্দ করে তাদের ছেলে মাহফুজকে হাত-পা ভেঙে হত্যার হুমকি দেয়। তখন আছমা আক্তার স্বামী সোহাগকে ভিডিও কল করে এসব কথা বলেন। পরে ভিডিও কলে স্বামী সোহাগও মাহফুজকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।

নিহতের চাচা মো. আকবর হোসেন শিপন বলেন, শনিবার রাতে আমার ভাই মাহফুজ বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোঁজাখুজি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার মা হাজেরা বেগম বাড়ির উত্তর দিকে রান্না ঘরের পিছনে পেয়ারা গাছের সঙ্গে মাহফুজকে বাঁধা অবস্থায় দেখে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে মৃত অবস্থা দেখে পুলিশে খবর দেয়। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহৃ দেখা গেছে।

মাহফুজের বাবা ছায়েদুল হক বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে তার বন্ধু সোহাগের ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সোহাগের স্ত্রী আছমা আমার ছেলে মাহফুজকে প্রায় কু-প্রস্তাব দিতো, পরকীয়া প্রেম করতে চাইতো, খারাপ ভিডিও পাঠাতো। এসব বিষয় মাহফুজ তার ভাবিকে একাধিকবার জানিয়েছিল। এ নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করায় শুক্রবার রাতে সোহাগের দুলাভাই শাহীনের নেতৃত্বে তার স্ত্রী আছমা, ভাই সবুজসহ সংঘবদ্ধ দল আমার ছেলেকে হত্যা করে আমাদের বাড়ির রান্না ঘরের পিছনের একটি ছোট্ট পেয়ারা গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে তারা পালিয়ে যায়। মাহফুজের হত্যার সঠিক তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করেন তার বাবা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রবাসী সোহাগের স্ত্রীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।  

সুধারাম থানার ওসি মো. কামরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ভাবে এটি আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তবে লাশের সুরতহাল প্রতিবদেন করে ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।  

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়