
ফাইল ছবি
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জামায়াত নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন বিএনপির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জিয়া মঞ্চের রংপুর জেলা সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবাদ বার্তায় এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল রংপুর জেলা জিয়া মঞ্চের সদস্য সচিব শাকিল আহমেদের নেতৃত্বে স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ী আঃ জলিলের স্কেভেটর দিয়ে তুলশীডাঙ্গা এলাকায় অবৈধ মাটি উত্তোলন ও বিক্রি করা হচ্ছিল। খবর পেয়ে মিঠাপুকুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুলতামিস বিল্লাহ অভিযান চালিয়ে একটি স্কেভেটর ও একটি মাটি পরিবহনকারী ট্রাক্টর জব্দ করেন। মালিকদের অনুপস্থিতিতে তাৎক্ষণিক জরিমানা আদায় সম্ভব না হওয়ায় উক্ত যানদ্বয় মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা জামায়াত সেক্রেটারি শফিকুল ইসলামের জিম্মায় প্রদান করা হয়।
এরপর জরিমানা বা মামলা হওয়ার কথা থাকলেও শাকিল আহমেদ বারবার ফোন করে চেয়ারম্যানকে জরিমানা কমানোর জন্য এসিল্যান্ডকে অনুরোধ করতে বলেন। এ বিষয়টি নিয়ে শাকিল ও চেয়ারম্যানের মধ্যে মুঠোফোনে কথোপকথনের একটি রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করেন শাকিল। যেখানে তিনি দাবি করেন, চেয়ারম্যান এসিল্যান্ডের নাম করে তার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
আরও পড়ুন>>>শাহবাগ মোড় অবরোধ ছাত্রদলের, যান চলাচল বন্ধ
শাকিল বলেন, আমি বিএনপির রাজনীতি করি বলেই চেয়ারম্যান ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে হয়রানি করছে। ভেকু ছাড়িয়ে নিতে গেলে চেয়ারম্যান ২ লাখ টাকা দাবি করেন। পরবর্তীতে গোপনে জুয়েলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভেকু ছেড়ে দেন। বিষয়টি প্রমাণ হিসেবে আমার কাছে কল রেকর্ড রয়েছে।
অন্যদিকে জুয়েল নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ভেকুর ভাড়াটিয়া মালিক দাবি করে বলেন, শাকিল ভাইরা যখন ব্যর্থ হয়, তখন আমি ব্যক্তিগতভাবে চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করলে তিনি ২ লাখ টাকা দাবি করেন। ১০ এপ্রিল রাতে আমি তার ব্যক্তিগত অফিসে গিয়ে টাকা দেয়ার পর তিনি ভেকু ছেড়ে দেন। তবে তিনি মালিকানার কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। টাকার লেনদেনের কোনও সাক্ষ্যও নেই।
এ বিষয়ে মূল ভেকুর মালিক আব্দুল জলিল জানান, ভেকুটি শাকিল ও জুয়েল ভাড়া নিয়েছিল। জব্দের পর তারা ব্যর্থ হলে আমি এসিল্যান্ডের সঙ্গে কথা বলি। তার পরামর্শ অনুযায়ী চেয়ারম্যানের কাছে মুচলেকা দিয়ে ভেকু ফেরত আনি। এখানে কোনও টাকার লেনদেন হয়নি। জুয়েল যদি মালিক হন, তাহলে কেন তিনি মুচলেকায় স্বাক্ষর করেননি?
স্থানীয় বাসিন্দা সাগর বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর জিয়া মঞ্চের নেতা শাকিল ও তার অনুসারীরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মির্জাপুর ইউনিয়নে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করছে। যার ফলে স্থানীয় কাঁচা রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। চেয়ারম্যান এসব কাজে বাধা দেয়ায় শাকিল ও জুয়েল তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি কয়েকবার তাদের অবৈধ কাজ বন্ধ করেছি বলেই তারা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। জরিমানা কমাতে শাকিল আমাকে এসিল্যান্ডকে সুপারিশ করতে বলেছিল, কিন্তু আমি কোনো চাঁদা চাইনি। মুঠোফোনের রেকর্ডও উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাটছাঁট করে প্রচার করা হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুলতামিস বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে কাউকে না পাওয়ায় জরিমানা আদায় করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ভেকুর মালিক আব্দুল জলিল মুচলেকা দিয়ে আমার অনুমতিক্রমে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ভেকু ফেরত নিয়েছেন। এখানে কোনও অর্থ লেনদেন হয়নি। জুয়েল নামের কারও মালিকানা সম্পর্কেও আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।