Apan Desh | আপন দেশ

‘জামায়াত ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে কাজ করছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘জামায়াত ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে কাজ করছে’

রুহুল কবির রিজভী। 

জামায়াতে ইসলামী পতিত ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে কাজ করছে। এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।

রিজভী বলেন, যারা ফ্যাসিস্টদের ফিরিয়ে আনার কথা ভাবছেন ও তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাইছেন, তারা ইতিহাস থেকে কোনো শিক্ষা নেননি।জামায়াতে ইসলামী সবসময়ই আওয়ামী লীগকে খুশি করার জন্য কাজ করে আসছে।

তিনি বলেন, ইসলামপন্থি এ দলটি রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছিল শহীদ জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে, যখন তারা নিষিদ্ধ ছিল। অথচ, জামায়াত তাদের কোনো সভা বা কর্মসূচিতে জিয়াউর রহমানকে সমর্থন করেনি, বরং তার সমালোচনা করেছে।

আরও পড়ুন>>>পিআর মানেই স্থায়ী অস্থিতিশীলতা: সালাহউদ্দিন

রিজভী বলেন, ৮৬ সালে নির্বাচন যাওয়া সেটাও তারা আওয়ামী লীগ নির্বাচনে গেছে... মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এক আর কাজ করেছে আারেক। ঠিক একই ভাবে তারা (জামায়াতে ইসলামী) ও করেছে। এরপরে আমরা দেখেছি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ যে আন্দোলন করল, সে আন্দোলনেও তারা জ্বালাও-পোড়াও যে আন্দোলন হয়েছিলো সে আন্দোলনেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে তারাও করেছে। বিভিন্ন জায়গায় ওই সময়ে তারা হত্যাও করেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র টিটোকে শিবির (ইসলামী ছাত্রশিবির) গুলি করে হত্যা করেছিলো, ১৯৯৫-৯৬ সালে যে আন্দোলন হয়েছিলো.. এটা তো কারো ভুলে যাওয়ার কথা নয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে যাওয়া, খালেদা জিয়া যেতে চাননি…তাদেরই নেতারা বাধ্য করেছিল, না হলে তারা স্বতন্ত্রভাবে করবে। এখন আবার তারা স্বরুপে বেরিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চাচ্ছেন, ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাচ্ছেন। কিন্তু এটাও আমাদের মনে রাখতে হবে এই দেশটি শেখ হাসিনার মতো রক্ত পিপাসু দানবকে প্রশ্রয় দিয়েছে নিজ দেশের মানুষকে হত্যা করার জন্য।

রিজভী বলেন, কখনোই কোনো রক্ত পিপাসু, গণতন্ত্র ধ্বংসকারী ও নিজের দেশের যে হত্যা করে ক্ষমতাকে চিরতরে আঁকড়ে রাখার যার বাসনা ছিলো এরকম বাংলাদেশি মডেলে যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলেন শেখ হাসিনা, সে ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান বা পুনর্জাগরণের কোনো সুযোগ বাংলাদেশে নাই। এদেশের মানুষ মধ্যপন্থি, এদেশের মানুষ ধর্মভীরু কিন্তু গণতন্ত্র প্রিয়। তারা কথা বলতে চায় নির্ভয়ে, তারা এক-দুই বেলা কম খেলেও তাদের কন্ঠের আওয়াজ তীব্র করতে চায়। সেদেশের মানুষকে জোর করে ফ্যাসিবাদের নতুন ধারায় কেউ মনে করে যে নিয়ে আসতে চাইবে এটা জনগণ হতে দেবে না।

তিনি বলেন, যে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলির জন্য নির্দেশ দিচ্ছেন এবং গতকাল যে আলামতগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে ডকুমেন্ট ও টেলিফোন কথোপকথনের ক্লিপসহ এসব যে কেউ শুনলে শিহরিত হয়ে উঠবে। আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি, আন্দোলন করেছি, রাজনীতি করেছি আমরা প্রত্যেকে মৃত্যুর মুখোমুখি ছিলাম। শেখ হাসিনার বর্বরতা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি, নিজেরা উপীড়নের শিকার হয়েছি, দিনের পর দিন রিমান্ডে থেকেছি, মাসের পর মাস জেলখানায় থেকেছি। তার ভয়াবহতা আমরা দেখেছি। কিন্তু এর গভীরে যে আরও ভয়াবহতা ছিল, তারা একটি আন্দোলনকে দমানোর জন্য কী ভয়ংকর পরিণতির দিকে নিয়ে গিয়েছিলো সেটা এখন প্রতিদিনকার যে আলামতগুলো আদালতে জমা হচ্ছে, সেখানে উপস্থাপন করা হচ্ছে তা থেকে বুঝা যায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোন কথোপকথনের যে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হচ্ছে তাতেই আমাদের মধ্যে উদ্বেগ-শঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

রিজভী আরও বলেন, এ অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টার কর্মকান্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠছে। আজকের গণমাধ্যমে এসেছে, উপদেষ্টা সজীব ভূঁইয়া তার নিজ এলাকায় সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ নিয়েছেন, প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। এটা এক ধরনের বৈষম্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কাজ। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের এলাকা উন্নয়নের নামে ভবিষ্যতে এমপি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে আশঙ্কা করছে সাধারণ মানুষ।

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়