
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির লোগো
স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে এক কাতারে এসে আন্দোলনে নেমেছিলেন বিভিন্ন দল-মত-পথের মানুষ। তবে, ক্রেডিট নেয়ার প্রতিযোগিতা অনেকটা বিভক্ত করে সেই ঐক্যকে। সেই সাথে আত্মপ্রকাশ ঘটে ছাত্রদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্ট- এনসিপির।
তবে, শুরু থেকে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এনসিপির প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে আসছে জামায়াত-শিবির ও ইসলামপন্থিদের অনেকে। সবশেষ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের চূড়ান্ত আন্দোলনেও যুগপৎ উপস্থিতি দেখা গেছে তাদের। কিন্তু, এই আন্দোলনের ফসল ওঠার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দেখা দেয় বিরোধ। যার নেপথ্যে জামায়াতের দলীয় ও বিতর্কিত স্লোগান। বিশেষ করে, উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের স্ট্যাটাসে পর দুই দলের মধ্যে চলছে এনসিপি ও জামায়াতের কথার লড়াই।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের কি অবদান সেটা কি উনি জানেন না। এই দুই-তিন দিন আগেও যে আন্দোলন হলো সেখানে জামায়াত-শিবির ছিল না? আপনাদের প্রশ্নগুলো আগে তুলতেন। বিজয়ের পরে কেন এই প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে বোতল নিক্ষেপ: এনসিপি নেতাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
চলমান তর্ককে পুরানো কাসুন্দি ঘাটার সঙ্গে তুলনা করে তিনি আরও বলেন, এখন এ বিষয়কে টেনে আনার অর্থ হলো আওয়ামী বয়ানকে টেনে আনা। উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এটা বুঝে বলেছেন নাকি না বুঝে বলেছেন, এটা তো তা বিরুদ্ধেই গেল।
এদিকে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, বিষয়টা তো আমার না যে আপনি এসে আমাকে সাহায্য করলেন। স্বৈরাচার বিরোধিতা কি আপনার ইস্যু না? আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা কি আপনার ইস্যু না? তাহলে আপনি তো আপনার কারণেই এসেছেন আমাকে সাহায্য করতে না। হ্যাঁ ডাক আমরা দিয়েছি ঠিক আছে, কিন্তু আপনি আপনার জন্যেই এসেছেন, আমাকে সাহায্য করার জন্যে না।
একাত্তর প্রশ্নে আপোষ নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমরা তো পারতাম দলীয় স্লোগান দিতে, এনসিপি জিন্দাবাদ এটা আমরা বলতে পারতাম। কিন্তু এনসিপির কেউ এমন কোন স্লোগান দেয়নি। তাহলে আপনি কেনো দলীয় স্লোগান-দলীয় গান গাইবেন। এটা করে আপনি আসলে একসঙ্গে কাজ করার চুক্তিগুলো ভঙ্গ করেছেন।
তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এনসিপির এই আহ্বায়ক মনে করেন, মতবিরোধ থাকলেও, রাজনীতির কৌশলগত প্রয়োজনে একসাথে মাঠে নামতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না। তিনি বলেন, বিবেকবান একজন মানুষ কেন আজকের দিনে কেন একাত্তরের গণহত্যার দায় নিয়ে বেড়াবে, সে যদি হয় আবার এখনকার জেনারেশনের মানুষ। কিন্তু এই দলে থাকলে এই দায় তাকে নিতে হচ্ছে। তাই দলেরই উচিত তাদের অবস্থান থেকে এ বিষয়গুলো পরিষ্কার করা। সেটাই আমি আমাদের জায়গা থেকে বলেছি।
যার যার আদর্শিক অবস্থানে অনড় থাকলেও, কোনো তৃতীয়পক্ষ যেন সুযোগ নিতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ থাকার কথা বলছে দুই দলই।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।