
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় বসছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ আলোচনায় অংশ নিতে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমি মিলনায়তনে উপস্থিত হচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
সোমবার (০২ জুন) বিকেলে শুরু হচ্ছে এ গুরুত্বপূর্ণ সংলাপ। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আলোচনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বিকেল চারটার কিছু আগে বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত হন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আসেন নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকীও আলোচনায় যোগ দেন। এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারও উপস্থিত ছিলেন। এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদসহ আরও অনেক রাজনৈতিক নেতা আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন।
আজকের আলোচনায় ২৮টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় বসছে। ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনা হবে বিষয়ভিত্তিক। পবিত্র ঈদুল আজহার আগে একদিন ও ঈদের পরে দলগুলোর ধারাবাহিকভাবে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা চলবে। বিশেষ করে সংবিধান সংস্কার কমিশনের যে-সব মৌলিক প্রস্তাবে এখনো ঐকমত্য হয়নি সেগুলো এ পর্বে বেশি গুরুত্ব পাবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী জুলাই মাসে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করার লক্ষ্য রয়েছে ঐকমত্য কমিশনের।
গত বছরের অক্টোবরে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচারবিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ফেব্রুয়ারিতে কমিশনগুলো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়। সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
পুলিশ সংস্কার কমিশন বাদে বাকী পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি প্রস্তাব ছক আকারে দলগুলোর কাছে পাঠিয়ে মতামত নেয় কমিশন। এরপর গত ২০ মার্চ থেকে দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে প্রথম পর্বের আলোচনা শুরু হয়। প্রথম পর্বের আলোচনা শেষ হয় ১৯ মে। প্রথম পর্বে ৩৩টি দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন।
পরে ২৬ মে ঐকমত্য কমিশন সংবাদ সম্মেলন করে প্রথম ধাপের আলোচনার অগ্রগতি তুলে ধরে। প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় যে-সব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে ও যেগুলোতে ঐকমত্য হয়নি, এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বা সুপারিশের কথা সেদিন সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
ক্ষমতার ভারসাম্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রশ্নে এখনো ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি বলে ওই দিন জানিয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণের কাঠামো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কতবার নির্বাচিত হতে পারবেন, একজন সংসদ সদস্য কতগুলো পদে থাকতে পারবেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া কী হবে, সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া কী হবে—এ ধরনের মৌলিক কাঠামোগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অমীমাংসিত থেকে গেছে। তবে এসব বিষয়ে অনেক দল আরও আলোচনার কথা বলেছে ও আলোচনায় নমনীয়তা দেখিয়েছে বলে জানায় ঐকমত্য কমিশন।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।