Apan Desh | আপন দেশ

কি আছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:৪৫, ৫ মে ২০২৫

আপডেট: ১৪:৪৭, ৫ মে ২০২৫

কি আছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্যরা

গত বছরের জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশের গুরুত্বপুর্ণ সেক্টরগুলোতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। তারমধ্যে অন্যতম হলো স্বাস্থ্যখাত। এ খাতের সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সোমবার (০৫ মে) সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্যরা।

প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানিয়েছেন। 

জানা গেছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে তা বিনামূল্যে প্রদানের সুপারিশ করেছে কমিশন। তারা বলেছে, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা শুধু একটি সেবাই নয়, বরং এটি সংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ও নাগরিক অধিকার। বাজেট সীমিত হলেও রাষ্ট্রের সদিচ্ছা থাকলে এটি বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন কমিশনের প্রধান ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান।

প্রতিবেদনে এমবিবিএস চিকিৎসক ছাড়া কাউকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ না দেয়ার কড়াকড়ি আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওষুধের দাম, ডায়াগনস্টিক টেস্ট ও চিকিৎসকদের পরামর্শ ফি নির্ধারণের বিষয়েও কেন্দ্রীয়ভাবে নীতিমালা তৈরি করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর দেয়া উপহার বা ওষুধের নমুনার মাধ্যমে চিকিৎসকদের প্রভাবিত করার প্রক্রিয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিকার কমিশন।

গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য প্রশাসনিক পদে যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রেখে নিয়োগ নিশ্চিত করতে একটি উচ্চপর্যায়ের সার্চ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছে কমিশন। এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিসের প্রধান ও উপপ্রধান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রো-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, বিএমডিসি ও বিএমআরসি’র চেয়ারম্যানদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে যাঁরা নিয়োগ পাবেন, তাদের যোগ্যতা সম্পর্কে জাতীয় সংসদকে অবহিত করতে হবে। একই সঙ্গে একটি স্বতন্ত্র ‘পাবলিক সার্ভিস কমিশন (স্বাস্থ্য)’ গঠনের আহবান জানানো হয়েছে, যা স্বাস্থ্যখাতে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করবে।

২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানকে প্রধান করে ১২ সদস্যবিশিষ্ট স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন গঠন করে।

কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ইনফরমেটিকস অধিদফতরের অধ্যাপক ডা. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লিয়াকত আলী, গাইনোকলজিস্ট অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার, শিশু স্নায়ুতন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ডা. নায়লা জামান খান, সাবেক সচিব এম এম রেজা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল) অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক, আইসিডিডিআর,বি’র বিজ্ঞানী ডা. আজহারুল ইসলাম, স্কয়ার হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, গ্রীন লাইফ সেন্টার ফর রিউম্যাটিক কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চের চিফ কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, আইসিডিডিআর,বি’র শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য বিভাগের বিজ্ঞানী ডা. আহমেদ এহসানুর রাহমান এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী উমায়ের আফিফ।

কমিশন গঠনের পর ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীতে সময় বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জমা দেয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

Advertisement

জনপ্রিয়