Apan Desh | আপন দেশ

যুক্তরাষ্ট্রে বিপাকে বিদেশি শিক্ষার্থীরা, পুলিশের ভয়ে ছাড়ছেন চাকরি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ২১:৫৯, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে বিপাকে বিদেশি শিক্ষার্থীরা, পুলিশের ভয়ে ছাড়ছেন চাকরি

ছবি: আপন দেশ

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির ফলে বিপাকে পড়েছেন সেদেশে অধ্যায়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীরা। কড়াকড়ি অভিবাসন নীতি ও বহিষ্কার হুমকির কারণে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে পার্ট-টাইম চাকরি ছাড়ার হিড়িক পড়েছে। এর ফলে অনেকে তাদের স্বপ্ন পূরণে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য এফ-১ ভিসা ইস্যুর হার ৩৮ শতাংশ কমেছে। সেসময় যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৩ হাজার ৪৯৫ জন ভারতীয় শিক্ষার্থী পড়ার অনুমতি পেলেও চলতি বছর এর সংখ্যা মাত্র ৬৪ হাজার ৮ জন।

ট্রাম্প প্রশাসনের ‘স্থানীয়করণ’ নীতির কারণে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা। 

ওহাইওর ক্লিভল্যান্ডে বসবাসরত সাই অপর্ণা ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুকে বলেন, আমি তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে মাস্টার্স শেষ করে এক বছর ধরে চাকরি খুঁজছি। এখানে চাকরি যেন সোনার হরিণ হয়ে গেছে।

এদিকে, দেশটির বিভিন্ন কর্মস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বেড়ে যাওযার অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে, অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং (ওপিটি) কর্মসূচির আওতায় থাকা শিক্ষার্থীদের কঠোর পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। অফ-ক্যাম্পাস পার্ট-টাইম চাকরির ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করায় অনেক শিক্ষার্থী চাকরি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।

নিউ জার্সিতে কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স করা এক ভারতীয় শিক্ষার্থী জানান, গ্যাস স্টেশনে কাজ করার সময় কর্মকর্তারা তার ভিসা ও পরিচয়পত্র পরীক্ষা করেন। অবশ্য সেসময় তার মালিক তাকে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে রক্ষা করেন।

অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইনামপুরী প্রশান্ত বলেন, আইসিই কর্মকর্তারা সবসময় নজর রাখছেন। ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করলে বহিষ্কারের ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য আমরা ঝুঁকি নিতে পারছি না।

কঠোর অভিবাসন নীতির ফলে বিশেষ করে, নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা বেশি বিপাকে পড়েছেন। কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষার্থী মঞ্জুষা নুথি বলেন, আমি কৃষক পরিবারের মেয়ে। তাই আমি বাড়ি থেকে টাকা চাইতে পারি না। এত কষ্ট করে এখানে পড়তে এসেছি, কিন্তু এখন জীবনযাত্রার খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

গ্যাস স্টেশনে পার্ট-টাইম চাকরি করতেন নুথি। কিন্তু কড়াকড়ির কারণে তিনি চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। নুথি বলেন, আমার ওপর ৩০ লাখ রুপি শিক্ষাঋণের বোঝা আছে। এ পরিস্থিতিতে কীভাবে তা শোধ করবো বুঝতে পারছি না।

ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতি ও কর্মস্থলে বাড়তি নজরদারিতে চরম সংকটে পড়েছেন ভারতীয় শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের বাইরে তাদের কাজ করার সুযোগ কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক চাপ আরও বেড়েছে। যা তাদের স্বপ্নপূরণের পথে বিরাট অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আপন দেশ/এমএস

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়