Apan Desh | আপন দেশ

যমুনার ভাঙনের শঙ্কায় ঝুঁকিতে পাঁচ শতাধিক পরিবার-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:০৫, ১৫ জুন ২০২৫

যমুনার ভাঙনের শঙ্কায় ঝুঁকিতে পাঁচ শতাধিক পরিবার-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

ছবি: আপন দেশ

বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই যমুনার পানি বাড়া-কমার সঙ্গে সঙ্গে ফের শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের ওমরপুর এলাকাজুড়ে পাঁচ কিলোমিটার বিস্তৃত অঞ্চলে দেখা দিয়েছে নদীভাঙনের ভয়াবহতা। এ ভাঙনে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে অন্তত পাঁচ শতাধিক পরিবার ও একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

ভাঙনের আশঙ্কায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে—দক্ষিণ গয়লা হোসেন দাখিল মাদ্রাসা, ডেকিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ গয়লা হোসেন নুরানি মাদ্রাসা, দক্ষিণ গয়লা হোসেন জামে মসজিদ, দক্ষিণ গোলাশন কবরস্থান, আব্দুল মান্নান সেতু।

স্থানীয়রা জানায়, প্রতি বছরই বর্ষা এলে যমুনার বাঁ তীরে দেখা দেয় ভাঙন। পানি কমলেও রক্ষা নেই—এ সময়েও নদী গিলতে থাকে জমি, ঘরবাড়ি ও প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব।

স্থানীয় মরহুমা খায়রুন নেছা প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণ গয়লা হোসেন দাখিল মাদ্রাসাটি যমুনার করাল গ্রাসে গত ৫৩ বছরে ১৪ বার স্থানান্তর করা হয়েছে। একইভাবে, ডেকিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিও ১৫ থেকে ১৬ বার যমুনার পেটে চলে গেছে। বর্তমানে দুটি প্রতিষ্ঠানই ওমরপুর গ্রামে অবস্থিত। কিন্তু সেখানেও চলছে নতুন করে ভাঙনের আতঙ্ক।

৯০ বছর বয়সী আমিরুল ইসলাম বলেন, জীবনে পাঁচবার নদীভাঙনে বাড়ি হারিয়েছি। এখন যেখানে আছি, সেটিও অন্যের জমি লিজ নিয়ে। এবার যদি ভাঙে আর যাওয়ার জায়গা নেই।

আবুল হোসেন বলেন, আমার পরিবার ১৩ বার যমুনায় ভেঙেছে। শেষবার ভেঙে গেলে আর কিছু থাকবে না।

আব্দুল বাতেন বলেন, আমার নানা ও তার বংশধরদের ভিটে ১৪ বার ভেঙেছে। শেষমেশ শহরে গিয়ে ঠাঁই নিতে হয়েছে।

আইয়ুব আলী জানান, ৩০-৩৫টি গ্রাম ইতোমধ্যেই মানচিত্র থেকে মুছে গেছে। আমি নিজের বাড়ি ৭ বার সরিয়েছি।

কাকুয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জানান, গেলেই পানি বাড়লে বা কমলে ভাঙন শুরু হয়। এখনই যদি জিওব্যাগ ফেলা না হয়, আরও বাড়ি-ঘর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হারিয়ে যাবে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ইউএনও নাহিদা আক্তার আশ্বস্ত করে বলেন, আমরা ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি। প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়নে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। আশা করছি ১৫-২০ দিনের মধ্যে বরাদ্দ পেলে দ্রুত প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

আপন দেশ/এমবি
 

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়